logo

সময়: ০২:০৫, সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪

২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ০২:০৫ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ খবর

করোনার থাবা বাংলাদেশকে করেছে মনীষীশূন্য: ড.অনুপম সেন

Ekattor Shadhinota
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ | সময়ঃ ১০:৪৪
photo
করোনার থাবা বাংলাদেশকে করেছে মনীষীশূন্য: ড.অনুপম সেন

চট্টগ্রাম: একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন বলেছেন, করোনার দুঃসময় কাটলেও স্বজন-প্রিয়জন হারানোর দুঃসহ স্মৃতি সকলকেই বহন করতে হচ্ছে। এ করোনায় আমরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারিয়েছি যারা সমাজ, রাষ্ট্রকে এগিয়ে রাখতে তাদের জীবনের সর্বোচ্চ দিয়ে গিয়েছেন সারাজীবন।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থিয়েটার ইন্সটিটিউটে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, গবেষক ও সাহিত্যসাধক ড. ভূঁইয়া ইকবাল, চট্টল গবেষক ও সংস্কৃতি সংগঠক ড. শামসুল হোসাইন এবং শিল্পী মুর্তজা বশীরের স্মরণে এক স্মরণ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, করোনায় প্রয়াত জাতির বিবেক-খ্যাত জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, গবেষক ও সাহিত্যসাধক ড. ভূঁইয়া ইকবাল, চট্টল গবেষক ও সংস্কৃতি সংগঠক ড. শামসুল হোসাইন এবং দেশের আধুনিক চিত্রকলার মান্য শিল্পী মুর্তজা বশীর চারজনই কর্মসূত্রে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং নানা মাত্রিক কাজ ও ভূমিকার মাধ্যমে চট্টগ্রামের জনজীবনে স্মরণীয় অবদান রেখে গেছেন। তাদেরকে হারানোর ফলে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ তার বীর সন্তানদের হারিয়েছে। অনেক খ্যাতিমান ব্যক্তিই আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন এসময়। এদের শূন্যতা পূরন হবার নয়। শুধুমাত্র আমাদের দেশেই নয়, পুরো বিশ্বেই অনেক বুদ্ধিজীবী যারা সমাজের প্রগতি নিয়ে কাজ করছিলেন অনেকেই মারা গিয়েছেন।  
একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষাবিজ্ঞানী ড. মাহবুবুল হক বলেন, ড. ভূইয়া ইকবাল ছিলেন একজন মনেপ্রাণে গবেষক। গবেষণা ছিল তার কাছে আনন্দব্রত। চাকরি থেকে অবসরের পরেও তার গবেষণা অব্যহত ছিল। তিনি কেবল একজন শিক্ষাবিদ ছিলেন না বা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষক ছিলেন।
চট্টল গবেষক ও সংস্কৃতি সংগঠক ড. শামসুল হোসাইনের স্মৃতি প্রকাশ করে একুশে পদক প্রাপ্ত আরেক কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, আমরা তাকে বাহাদুর ভাই বলে ডাকতাম। বিএ পাশ করে তিনি চবিতে ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হন। মূলত এখানেই এসেই তিনি তার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্য খুঁজে পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ইতিহাস বিভাগে সহকারী অধ্যাপকের কাজ করেন। জাদুঘর গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে ছাত্রজীবন শেষ হওয়ার পর থেকে বাহাদুর ভাই ধাপে ধাপে একজন প্রত্ন সম্পদ সংগ্রাহক, সংরক্ষক এসবের প্রদর্শক, প্রচারক হয়ে উঠেছিলেন। উনার অনেক লেখা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি নিজেকে ধীরে ধীরে তৈরী করেছেন। তার গবেষণা কাজ বের হয়েছে মৃত্যুর এক বছর পর।  
জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান নিয়ে বলতে গিয়ে অধ্যাপক গোলাম মুস্তফা বলেন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান প্রয়াত হওয়ার পর দুই বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হয়েছে। তার মৃত্যু আমাদের জ্ঞানচর্চা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে যে শূন্যতা সৃষ্টি করে গেছে তা পদে পদে অনুভব করবেন সকলেই। কৈশোরে ছবি বিশ্বাসের অভিনয় দেখে তাঁর ইচ্ছে হয়েছিল আইনজীবী হওয়ার। কিন্তু তিনি শেষ পর্যন্ত হলেন শিক্ষক। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন ষোলো বছর। চট্টগ্রাম থেকে তাঁর বিদায়ের দিন চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতরণ হয়। পুষ্পস্তবকে তাঁর কম্পার্টমেন্ট ভরে গিয়েছিল।  
উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শীলা দাশগুপ্ত ও আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসানের সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য রাখেন কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল, ড. ভূইয়া ইকবালের বড় ছেলে অনিন্দ্য ইকবাল, শিল্পী মুর্তজা বশিরের বড় মেয়ে মনিরা বশির, নাগরিক শোক সভার সমন্বয়কারী ও উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. চন্দন দাশ প্রমুখ।
স্মরণসভায় সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদ ও রক্তকরবীর শিল্পীরা।

শেয়ার করুন...

আরও পড়ুন...

ফেসবুকে আমরা…