logo

সময়: ০৪:০২, শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪

৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ০৪:০২ অপরাহ্ন

সর্বশেষ খবর

কয়েন প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের মূলহোতা সহ অন্যতম সহযোগী আসামী পিবিআই কর্তৃক গ্রেফতার।

Ekattor Shadhinota
০২ মে, ২০২৪ | সময়ঃ ১০:৪৮
photo
কয়েন প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের মূলহোতা সহ অন্যতম সহযোগী আসামী পিবিআই কর্তৃক গ্রেফতার।

কয়েন ব্যবসার কথা বলে বাদীর নিকট থেকে প্রতারণা করে ৩ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অপরাধে জড়িত আসামী ১। কাজী মোঃ ইউছুফ (৪৬), পিতা-মৃত ইসমাইল, মাতা- রজ্জবের নেছা, সাং-দত্তসার, ৬নং ওয়ার্ড, থানা-চৌদ্দগ্রাম, জেলা- কুমিল্লা, এ/পি- সাং-খেজুরিয়া, (নিরবের বাড়ী নিচ তলার ফ্ল্যাট), রোড-হাজী বাদশা মিয়া সড়ক, ১২ নং ওয়ার্ড, থানা-ফেনী সদর, জেলা-ফেনী কে গত ২৯/০৪/২০২৪ খ্রিঃ ১২.১০ ঘটিকার সময় ফেনী সদর থানাধীন খেজুরিয়াস্থ আসামীর ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্য মোতাবেক অপর সহযোগী আসামী ২। মোঃ মানিক মোল্লা (৬৬) পিতা-মৃত ইমান আলী মোল্লা, মাতা-মৃত ফুলবানু, সাং-চর বাকিলা, ৭নং ওয়ার্ড, থানা- চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর কে তার নিজ বাসা থেকে গত ২৯/০৪/২০২৪ খ্রিঃ ২০.৪৫ ঘটিকার সময় গ্রেফতার করা হয়।  

ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, মামলার বাদী মোঃ রফিকুল ইসলাম এবং ৫নং এজাহার নামীয় গ্রেফতারকৃত আসামী কাজী মোঃ ইউছুফ পূর্ব পরিচিত। পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে আসামী কাজী মোঃ ইউছুফ বাদীকে জানান যে, ৩০ (ত্রিশ) লক্ষ টাকা ইনভেস্ট করলে ২ দিনের মধ্যে ১০০ (একশত) কোটি টাকা পাওয়া যাবে। পরবর্তীতে কাজী মোঃ ইউছুফ এবং এজাহার নামীয় পলাতক ২নং আসামী গোলাম মাওলা (৫০) বাদীকে সিলেটে হযরত শাহ জালাল (রাহ:) ও হযরত শাহ পরান (রাহ:) এর মাজারে নিয়ে ব্যবসার কথা কাউকে না বলার শপথ করান। পরবর্তীতে এজাহারনামীয় অন্যান্য আসামীগণ বাদীকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ধাপে ধাপে মিটিং করেন। মিটিং এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক কয়েন দেখানোর জন্য বাদীকে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ মানিক মোল্লার বাসা চাঁদপুরে নিয়ে যান। আসামী মোঃ মানিক মোল্লার বাসায় আসামী গোলাম মাওলা, শামীম, বারি, ইউসুফ সহ অজ্ঞাত কয়েকজন মিলে কয়েনটি বিভিন্ন বৈদ্যুতিক আলোতে পরীক্ষা করে দেখান। বাদী দেখার পরে ঢাকা চলে আসেন। তখন গ্রেফতারকৃত আসামী মানিক এবং পলাতক আসামী গোলাম মাওলা,বারি, শামিম সহ আরো কয়েক জনের উপস্থিতিতে বাদী প্রথমে নগদ ১০ লক্ষ টাকা গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ মানিককে প্রদান করেন। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ মানিক মোল্লা কয়েনের প্রকৃত মালিক হওয়ায় নন জুডিসিয়াল ৪০০ টাকার স্ট্যাম্পে কয়েনের প্রতিনিধি হিসেবে বাদীর সাথে চুক্তি করেন। টাকা লেনদেনের সময় আসামী বারি, গোলাম মাওলা, শামীম,আঃ রহমান উপস্থিত ছিলেন। তারপর আসামী কাজী মোঃ ইউছুফ এবং মোঃ মানিক মোল্লা ও গোলাম মাওলা বাদীকে জানান যে কয়েনটি ঢাকা ডিপ্লোমেটিক জোনে উঠাতে হবে। এই বলে আসামীগণ বাদীর নিকট আরো ৫ কোটি টাকা দাবি করেন। তখন বাদী এবং আসামীদের মধ্যে দর কষাকষি হয়। দর কষাকষির এক পর্যায়ে ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা নির্ধারণ হয়। বাদী পর্যায়ক্রমে আসামী বারি, শামীমদের উপস্থিতিতে গোলাম মাওলাকে ৩০+২৫=৫৫ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। এর পর বাদী সহ আসামী কাজী মোঃ ইউছুফ কয়েন আনার জন্য চাঁদপুর যান। চাঁদপুরে বাদী পৌছার আগেই আসামীগণ কয়েন নিয়ে চাঁদপুর শহরে একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেন। সেখানে কয়েনের সাজানো মালিক ধৃত আসামী মোঃ মানিক মোল্লাসহ অন্যান্য আসামীদের নগদ ৪৯ লক্ষ টাকা প্রদান করেন এবং বাদী ও আসামীগণ লঞ্চ যোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। ঢাকার সদরঘাট পৌঁছা মাত্রই সাদা পোশাকধারী ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে বাদীকে ও আসামী ইউসুফকে একটি গাড়িতে উঠিয়ে নেয়। অন্যান্য আসামীদের অন্য একটি গাড়িতে উঠায়। সাদা পোশাক পরিহিত লোকজন কয়েনটি তাদের হেফাজতে নিয়ে ২/৩ ঘন্টা পর বাদী এবং আসামী ইউসুফকে ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে আসামী গোলাম মাওলার বন্ধু এজাহার নামীয় আসামী শাখাওয়াত হোসেন, এজাহার নামীয় ১১নং আসামীসহ বাদীর কাছে উপস্থিত হয়। আসামী সাখাওয়াত কয়েনটি ফিরিয়ে দিবেন বলে বাদীকে আশ^স্থ করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আসামী সাখাওয়াত বাদীর নিকট থেকে ২ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেন এবং আসামী লিটন বাদীর নিকট থেকে ৮০ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেন। বাদী গত ২৫/০৩/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে ঢাকা আন্তঃ বিমানবন্দর থানাতে ১৩ (তেরো) জন আসামীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ৩২, তাং- ২৫/০৩/২০২৪ খ্রিঃ ধারা-৪০৬/৪২০/৫০৬/৩৪ পেনাল কোড। ঢাকা আন্তঃ বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ মামলাটি রুজু করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) বরাবর প্রেরণ করেন। মামলাটি পিবিআই এর সিডিউল ভুক্ত হওয়ায়, পিবিআই, ঢাকা মেট্রো (উত্তর) তদন্তভার গ্রহণ করে। পরবর্তীতে অতিরিক্ত ডিআইজি, জনাব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, বিপিএম-সেবা মহোদয় মামলাটির তদন্তভার এসআই (নিঃ) মোঃ সিরাজ উদ্দিন এর উপর অর্পণ করেন। 

অ্যাডিশনাল আইজিপি, পিবিআই জনাব বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও দিক-নিদের্শনায় এবং পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) এর অতিরিক্ত ডিআইজি জনাব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, বিপিএম-সেবা মহোদয়ের নিবিড় তদারকিতে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) এর এসআই(নিঃ)/মোঃ সিরাজ উদ্দিন, এএসআই(নিঃ)/ ছিদ্দিকুর রহমান এবং কং/১৫০৬ মোঃ জহিরুল ইসলামদের সমন্বয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) এর একটি বিশেষ টিম কর্তৃক ঘটনার মূলহোতা এজাহারনামীয় ৫নং আসামী কাজী মোঃ ইউছুফ (৪৬) কে গত ২৯/০৪/২০২৪ খ্রিঃ ১২.১০ ঘটিকার সময় ফেনী সদর থানাধীন খেজুরিয়াস্থ আসামীর ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার সহযোগী অপর এজাহার নামীয় ৬নং আসামী মোঃ মানিক মোল্লা (৬৬) কে তার চাঁদপুরের নিজ বাসা থেকে গত ২৯/০৪/২০২৪ খ্রিঃ ২০.৪৫ ঘটিকার  গ্রেফতার করা হয়। আসামীদ্বয়কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১০(দশ) দিনের রিমান্ড আবেদন সহ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। বিজ্ঞ আদালত গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের ০৩ (তিন) দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। পুলিশ রিমান্ডে আসামীদ্বয় ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে।
 

শেয়ার করুন...

আরও পড়ুন...

ফেসবুকে আমরা…