জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫: বঙ্গোপসাগরের বড় একটি অংশের মালিকানা রয়েছে বাংলাদেশের। তবে অপার সম্ভাবনা থাকার পরও এই বিশাল জলরাশি থেকে সম্পদ আহরণের সক্ষমতা নেই। এজন্য বিদেশিদের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে সরকারকে। আবার বিশ্বের যেসব দেশ সমুদ্র সম্পদ আহরণের সক্ষমতা অর্জন করেছে, তাদের দক্ষ জনবল সংকট রয়েছে। বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণী বেকার থাকলেও দক্ষতার অভাবে তারা আন্তর্জাতিক শ্রম বাজার ধরতে পারছে না।
এমন অবস্থায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের কর্মমুখী শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে স্নাতক সম্মানে আইসিটি ও ইংরেজি বিষয় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একইসাথে কারিগরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করতে এটুআই, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও ইউনিসেফসহ বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নিউ হ্যাভেন, সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্ক ও জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটিসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ অংশীদারিত্বের আলোচনা চলছে। এ উদ্যোগে যুক্ত হতে পারে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটিও।
রবিবার রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীতে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত “ব্লু ইকোনমি গ্রোথ ইনিসিয়েটিভস ইন বাংলাদেশ” শীর্ষক সেমিনারে গেস্ট অব অনারের বক্তৃতায় এসব কথা বলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনোভেশন অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ল্যাব এবং বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি অব মেরিটাইম বিজনেস স্টাডিজ-এর মেরিটাইম ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ যৌথভাবে এ সেমিনার আয়োজন করে।
সেমিনারে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির মেরিটাইম ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ড. মোঃ সাইফুল ইসলাম শুভেচ্ছা বক্তব্য এবং বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর রিয়ার অ্যাডমিরাল ড. খন্দকার আক্তার হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর আমানুল্লাহ বলেন, সমুদ্র, পর্যটন ও বিমান খাতসহ বিভিন্ন প্রফেশনাল বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ তৈরি করতে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির মত প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। সারাদেশের তরুণ-তরুণীদের এসব প্রফেশনাল কোর্সের আওতায় আনতে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে কাজ করতে চায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
সেমিনারের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর রিয়ার এডমিরাল ড. খন্দকার আখতার হোসেন জানান, দক্ষ জনবল তৈরিতে দেশের বৃহত্তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি। এলক্ষ্যে দুই বিশ্ববিদ্যালয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে পারে।
সেমিনারে “ব্লু হোরাইজনস: লিভারেজিং এআই ফর সাসটেইনবেল ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’স মেরিটাইম ইকোনমি” বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউএনডিপি এক্সিলারেটর ল্যাব বাংলাদেশের হেড অব এক্সপেরিমেন্টেশন ড. রমিজ উদ্দিন, “কোস্টাল অ্যান্ড মেরিটাইম ট্যুরিজম: সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইনিসিয়েটিভস ফর বাংলাদেশ” বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও ইনোভেশন অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ল্যাবের উপ-পরিচালক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন ভূইয়াঁ এবং ”শিপ ব্রেকিং ইন্ডাস্ট্রি” বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর রিয়ার অ্যাডমিরাল ড. খন্দকার আক্তার হোসেন।
এসব বিষয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে সমাপনি বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও ইনোভেশন অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ল্যাবের পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ আবুদ্দারদা।