নোয়াখালী থেকে আরিফুল ইসলাম শাহীন।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনী বাজারে ব্যবসা করতে গিয়ে হকার্স সমিতির ব্যবসায়ীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও চৌমুহনী পৌরসভার প্রশাসক মো.আরিফুর রহমানের হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চৌমুহনী বাজারে সমিতির নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ অভিযোগ করেন নোয়াখালী জাতীয় হকার্স সমবায় সমিতি লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান হাজী মো.ইউছুফ। তিনি সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, ১৯৭৭ সালে ৮ একর ৪০ শতাংশ ভূমির উপর নির্মিত নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র চৌমুহনীতে অবস্থিত নোয়াখালী জাতীয় হকার্স সমিতি লিমিটেড। বর্তমানে এখানে প্রায় ২ হাজার ২শত ব্যবসায়ী ব্যবসা করছে। এ সমিতি চৌমুহনী পৌরসভাকে বছরে ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ট্যাক্স প্রদান করে। কিন্তু বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও চৌমুহনী পৌরসভার প্রশাসক মো.আরিফুর রহমান মার্কেটের রাস্তার পৌরসভার লাইট গুলো বন্ধ করে দিয়েছে। মার্কেটের সুইপার নিয়ে গেছে। মার্কেটের ময়লা-আবর্জনা গুলো স্তূপ হয়ে আছে। প্রায় ৬ মাস ধরে মার্কেটের ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হচ্ছে না। এই মার্কেটে প্রায় ২শত ডিস্ট্রিবিউটর ব্যবসায়ী রয়েছে। মার্কেটের সামনে ইউটার্ন দেওয়ার কারণে বড় গাড়ি গুলো মালামাল নিয়ে মার্কেটে প্রবেশ করতে পারছেনা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়েছে, বিনা নোটিশে গত ৬ অক্টোবর বিকেল সোয়া ৪টায় বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তার নেতৃত্বে সমিতির অফিসে এসে সমিতির সচিব আবুল খায়ের রাসেল ও পিয়ন মমিন উল্যাহ সুমনকে মারধর করে। অফিসের ভিতরে থাকা সকল আলমারি ও ড্রয়ারে তল্লাশী চালায়। এরপর তাদের অপরাধ ধামাচাপা দিতে সমিতির অফিসের সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলো নিয়ে যায়। এ সময় মার্কেটের বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। সমিতির অর্থায়নে জনস্বার্থে ডাসবিন করা হয়। ডাসবিন গুলো ইউএনওর নেতৃত্বে ভেঙ্গে দেওয়া হয়। একই সাথে দুইজন ব্যবসায়ীর সিঁড়ি ভেঙ্গে দেওয়া হয়। জোরপূর্বক সমিতির নিজস্ব জায়গায় সদস্যদের দোকান ঘর ভেঙ্গে শৌচাগার নির্মাণের অপচেষ্টা করা হচ্ছে। সমিতি অফিসের সামনে থকে ময়লা পরিষ্কারের বক্সটলিসহ ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীদের ৩০টি ভ্যান গাড়ি নিয়ে যায়। হাইকোর্ট ও জজ কোর্ট কর্তৃক সমিতির নিজস্ব জায়গায় অনুপ্রবেশের নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড ইউএনওর নেতৃত্বে ভেঙ্গে ফেলা হয়। এমনকি হাইকোর্ট নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। যা শুনে ব্যবসায়ীরা স্তব্ধ হয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে সমিতির কোষাধ্যক্ষ ইসমাইল হোসেন দুলাল, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নেজামুল ইসলাম রুবেল, হাজী অহিদ উদ্দিনসহ সমিতির পরিচালকবৃন্দ তাদের উপর চালানো নির্যাতন ও হয়রানির বিচার দাবি করেন। একই সাথে মার্কেটের আবর্জনা দ্রুত অপসারণ, ইউটার্ন সরানো এবং একটি নতুন শৌচাগার নির্মাণের জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চৌমুহনী পৌরসভার প্রশাসক মো.আরিফুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই এ বিষয়ে তার কোন বক্তব্য জানা যায়নি।