ঢাকা ৩ অক্টোবর:
দক্ষিণ এশীয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কাউন্সিল (এসএটিআরসি) এর ২৪তম সম্মেলন ঢাকায় শুরু হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের তত্ত্বাবধানে বিটিআরসি ও এশিয়া-প্যাসিফিক টেলিকমিউনিটি (এপিটি) এই সম্মেলনের আয়োজন করে। ভারত,পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ ও ইরানসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৯টি দেশের টেলিযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক রেগুলেটরি সংস্থার প্রধান, টেলিকম অপারেটর, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, টেলিকম ও তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের প্রায় ১০০ জন প্রতিনিধি এতে অংশগ্রহণ করেন। ৫ অক্টোবর ৯ টি দেশের এই মিলন মেলা শেষ হবে। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, এমপি তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার, সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং এপিটি সেক্রেটারি জেনারেল মাসানোরি কোন্ডো অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
স্পিকার শিরিন শারমিন টেলিযোগাযোগা ও তথ্যযোগাযোগ প্রযুক্তিতে দক্ষিণ এশিয়াকে ইমাজিন টাইগার আখ্যায়িত করে বলেন, এই অঞ্চলের ৯টি দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এই খাতকে আরো বেশি এগিয়ে নেওয়ার জন্য এসএটিআরসি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। এসএটিআরসির ২৪তম সম্মেলন ঢাকায় আয়োজন করায় তিনি বিটিআরসিকে ধন্যবাদ জানান।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতের রূপান্তর দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বিস্ময়কর অবদান রাখছে উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশকে কম্পিউটার যুগে রূপান্তর করেন। ২০০৮ সালে ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের পর স্মার্ট বাংলাদেশের অভিযাত্রা আমরা শুরু করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশনারি নেতৃত্বে ইতোমধ্যে দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকায় মোবাইলের ফোরজি প্রযুক্তি পৌছে গেছে। প্রতি ইউনিয়নে পৌছেছে ফাইবার অপটিক্স। ডিজিটাল সংযুক্তির শক্তিশালী ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে ২০৪১ সালে গড়ে উঠবে স্মার্ট বাংলাদেশ। এই স্মার্ট বাংলাদেশই বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা। মন্ত্রী ডিজিটাল সংযুক্তি স্মার্ট বাংলাদেশের মূলভিত্তি উল্লেখ করে বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৪১’ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে দেশে টেলিডেনসিটি ছিলো শতকরা ৩০ ভাগ, বর্তমানে টেলিডেনসিটি শতকরা ১০৫ ভাগে উন্নীত হয়েছে। সে সময় দেশে সাড়ে সাত জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হতো এবং মাত্র ৮ লাখ মানুষ তা ব্যবহার করতো। বর্তমানে প্রায় তের কোটি মানুষ প্রায় ৫০০০ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। ২০৩০ সালে দেশে ৩০ হাজার জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হবে। ২০০৮ সালে প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেটের দাম ছিল ২৭ হাজার টাকা বর্তমানে তা কমিয়ে একদেশ এক রেটে কর্মসূচীর আওতায় মাত্র ৬০ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।
ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার এসএটিআরসির ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, ১৯৯৭ সালে দক্ষিণ এশিয়ার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে এসএটিআরসি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংস্থা বেতার তরঙ্গ সমন্বয়, স্টান্ডার্ডাইজেশন, রেগুলেটরি প্রবণতা, টেলিযোগাযোগ খাত উন্নয়নের কৌশল এবং টেলিযোগযোগ সংক্রান্ত আঞ্চলিক সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী সম্পর্কে গৃহীত কর্মকৌশল দেশে ডিজিটাল সংযুক্তি ও প্রযুক্তি বিকাশে বিটিআরসির সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ফলপ্রসূ অবদান রেখে চলেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে ডিজিটাল সংযুক্তি ও ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে আগামী দিনগুলোতে অবদান রাখবে বলে মন্ত্রী দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।