logo

সময়: ০৪:৩৭, রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪

২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ খবর

ছাত্রলীগের সম্মেলন : নেতৃত্বের দৌড়ঝাঁপে এগিয়ে যারা

Ekattor Shadhinota
১৬ নভেম্বর, ২০২২ | সময়ঃ ১২:১৯
photo
ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিনিধি:দেশের প্রাচীনতম ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনকে কেন্দ্র করে পদপ্রত্যাশীদের চোখে যেন ঘুম নেই। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়ে গেছে তাদের দৌড়ঝাঁপ। বিভিন্ন মহলে চলছে নানা রকম যোগাযোগ। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্লিন ইমেজ, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ এবং ত্যাগী নেতাদের বিবেচনায় রাখছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। এসব দিক বিবেচনায় এগিয়ে রয়েছেন দুই ডজনের বেশি পদপ্রত্যাশী।
আগামী ৩ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলন হওয়ার কথা। তবে সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন হচ্ছে বলে জানা গেছে। যদিও এখনও নতুন কোনো তারিখ জানা যায়নি।
এর আগে, ২০১৮ সালের মে মাসে ছাত্রলীগের ২৯তম কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক হন গোলাম রাব্বানী। তবে মাত্র এক বছরের মাথায় অনিয়ম ও চাঁদাবাজির অভিযোগে তাদের নেতৃত্ব থেকে অপসারণ করা হয়। এরপর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এক নম্বর সহসভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিন মাস পর ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জয় ও লেখককে ভারমুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, দুই বছর পরপর হবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সম্মেলন। সে হিসাবে মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও সম্মেলনের আয়োজন করতে ব্যর্থ হয়েছেন জয়-লেখক। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এমনকি সম্মেলনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনও করে ছাত্রলীগের একাংশ। পরবর্তীতে গত ৪ নভেম্বর গণভবনে এক সভা শেষে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড আগামী ৩ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের সম্মেলন আয়োজনের নির্দেশ দেয়।
এদিকে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পরপরই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন পদপ্রত্যাশীরা। দিন নেই রাত নেই তারা ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চার নেতা- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এব সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকসহ দলের অন্যান্য প্রভাবশালী নেতার কাছে ধরনা দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, কেউ কেউ দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছেও পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। অনেক পদপ্রত্যাশী নেতা তাকে মোবাইল ফোনে ম্যাসেজও পাঠিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে বিরক্তিও প্রকাশ করেছেন তিনি।

নেতৃত্বের দৌড়ে যেসব নেতারা এগিয়ে রয়েছেন-

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোহান খান, সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ, সহ-সভাপতি সৈয়দ আরিফ হোসাইন, সহসভাপতি রাকিব হোসাইন, সহসভাপতি ইফতেখার আহমেদ সজিব, সহসভাপতি রাকিবুল হাসান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তাহসান আহমেদ রাসেল, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ইনান, আইন বিষয়ক সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত, মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহিন, শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ লিমন, ক্রীড়া সম্পাদক আল আমিন সিদ্দিকী সুজন, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু, মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক মেহেদি হাসান তাপস, আপ্যায়ন সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম ফাহাদ, উপদপ্তর সম্পাদক আহসান হাবীব, উপসাহিত্য সম্পাদক জয়জিৎ দত্ত, উপবিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক সবুর খান কলিন্স, গণশিক্ষাবিষয়ক উপসম্পাদক সোলাইমান ইসলাম মুন্না, তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপসম্পাদক রাশিদ শাহরিয়ার উদয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। এর বাইরেও সহসভাপতি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে শতাধিক নেতা আলোচনায় রয়েছেন।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের একাধিক নেতা আরটিভি নিউজকে বলেন, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সুন্দরভাবে সংগঠন চালাবে এমন নেতৃত্ব আমরা চাই। বর্তমান কমিটির শীর্ষ দুই নেতা সম্মেলন ছাড়া রাতের আধাঁরে শুধু প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অনেক কমিটি দিয়েছে। যা মোটেই উচিত নয়। কমিটি দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই বিবেচনা বোধ থাকা উচিত। তারা তাদের মেয়াদে সম্মেলনের মাধ্যমে যে কয়টা জেলা কমিটি পারবে দেবে। বাকিগুলো পরবর্তীতে যারা নেতৃত্বে আসবে তারা দেবে। কিন্তু তারা সেটি করেননি। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হওয়ার পরও তারা বিভিন্ন জেলায় প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিটি দিয়েছে। অনৈতিক ‍সুবিধা না পেলে তারা কেনো এভাবে কমিটি দিবে? তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ছাত্রলীগের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়। এজন্য এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড থেকে ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বলেন, মেধাবী শিক্ষার্থী, পরিচ্ছন্ন ইমেজ এবং সাংগঠনিকভাবে দক্ষ নেতারা পদ পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন। বিশেষ করে বিগত দিনগুলোতে যারা সরাসরি আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নিয়েছে, তারা প্রাধান্য পাবে। এ ছাড়া যেহেতু সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন; তাই এমন নেতা নির্বাচন করা হবে যাতে ভোটের সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করতে পারে। তবে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ, ক্লিন ইমেজ, শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং আওয়ামী পরিবারের- এমন নেতাই বেছে নেওয়া হবে।
আলোচনায় থাকা অধিকাংশের বয়স গঠনতন্ত্র অনুযায়ী (২৭) নেই। সেক্ষেত্রে কী ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, বয়সে ছাড় দেওয়া হবে কি না- এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএম মোজাম্মেল জানান, বয়সের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাই সিদ্ধান্ত নেবেন।
এদিকে ছাত্রলীগের সম্মেলন পেছানো হচ্ছে কি না জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম আরটিভি নিউজকে বলেন, ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন হতে পারে। তবে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। যেগুলো বলা হচ্ছে, সব শোনা কথা। সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন হলে অবশ্যই জানানো হবে।

শেয়ার করুন...

আরও পড়ুন...

ফেসবুকে আমরা…