জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫: উচ্চশিক্ষাকে অধিকতর জীবনমুখী ও যুগোপযোগী করার জন্য কার্যক্রম শুরু করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এরইমধ্যে সিলেবাস সংস্কার করে তথ্য প্রযুক্তি ও ইংরেজি বিষয় স্নাতক সম্মানে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
উচ্চশিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন ও শিক্ষা ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নে অধিভুক্ত কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর অংশ হিসেবে শনিবার জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে প্রথম মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জামালপুর ও শেরপুর জেলার বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ।
অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. হারুন অর রশিদ। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. নূরুল ইসলাম এবং জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আফসানা তাসলিম।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিন আহাম্মদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এনামুল করীম।
সভায় শহীদ জিয়াউর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ এ এস এম আব্দুল্লাহ মো. ফুয়াদ, শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আ জ ম রেজাউল করিম খান, সরকারি জাহেদা শফির মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ফাহিমা সুলতানা এবং শেরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আব্দুর রউফ বক্তব্য রাখেন। নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তারা শিক্ষা বিষয়ক নানা পরামর্শ দেন। এছাড়াও দুই জন শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরের কাছে তাদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ সবার বক্তব্য ও পরামর্শ মনোযোগ দিয়ে শোনেন।
অধ্যাপক আমানুল্লাহ বলেন, ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ বিশেষ করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চাহিদা পূরণে শিক্ষার্থীদের দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাই সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে আলোচনা করে কলেজসমূহের বিদ্যমান সমস্যা খুঁজে বের করে, তা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
তিনি জানান, ছাত্র-ছাত্রীদের আধুনিক ও মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রদান নিশ্চিতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি এমফিল পিএইচডি করার সুযোগ দিচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ইন্টানশিপের ব্যবস্থা ও চলমান বৃত্তির পরিমাণ দ্বিগুণ করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কলেজ শিক্ষাথীদের সংযোগ স্থাপনে হটলাইন চালু এবং শিগগিরই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠন করা হবে।
তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের যথাযথ জ্ঞানলাভের সুযোগ তৈরি করতে আইসিটি ল্যাবের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিভিন্ন কলেজে আইসিটি ল্যাব স্থাপনে জেলা পরিষদ এগিয়ে আসতে পারে। এতে কলেজগুলোর উপর চাপ কমবে।
জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে সভা শুরু হওয়ার পর ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ এর জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
পরে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ প্রকাশিত জার্নালের মোড়ক উন্মোচন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ।