logo

সময়: ০৮:৩২, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ০৮:৩২ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ খবর

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অপরাধীদের বিচারের দাবিতে রাজশাহীতে ক্যাবের মানববন্ধন

Ekattor Shadhinota
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ | সময়ঃ ১০:৫৯
photo
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অপরাধীদের বিচারের দাবিতে রাজশাহীতে ক্যাবের মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দায়মুক্তি আইনের আওতায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সম্পাদিত সব বিনিয়োগ ও ক্রয় চুক্তি বাতিল এবং জ্বালানি অপরাধীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ক্যাব। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজশাহী মহানগরের জিরো পয়েন্টে ক্যাব রাজশাহীর আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ক্যাব রাজশাহীর সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান। ক্যাব রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম মোস্তাফা মামুনের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন ক্যাবের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার খাদেমুল ইসলাম, দৈনিক সোনালী সংবাদের সম্পাদক লিয়াকত আলী, শিক্ষা সুরক্ষা কমিটি রাজশাহীর সহসভাপতি ওবায়দুর রহমান, ক্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হেমরম, দপ্তর সম্পাদক কবি অম্লান অনিরুদ্ধ, ক্যাব পবা উপজেলা সভাপতি কাজী নাজমুল ইসলাম, ক্যাব ইয়ুথ গ্রুপের সভাপতি জুলফিকার হায়দর, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাগরিকা এবং ক্যাব ইয়ুথ গ্রুপ রাজশাহী কলেজ সভাপতি শরিফুল ইসলাম সৌরভসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

সভাপতির বক্তব্যে ক্যাব রাজশাহীর সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, দায়মুক্তি আইন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দুর্নীতি ও লুটপাটকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। এই আইনের সুযোগে জনগণের অর্থ ব্যয় করে করা বহু চুক্তি জনস্বার্থবিরোধী ও অস্বচ্ছ। তিনি বলেন, “জনগণের অর্থে গড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত কোনোভাবেই একটি গোষ্ঠীর মুনাফার ক্ষেত্র হতে পারে না। দায়মুক্তির সংস্কৃতি বাতিল করে সব বিতর্কিত বিনিয়োগ ও ক্রয় চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে এবং জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিল করতে হবে। ”

ক্যাব রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম মোস্তাফা মামুন বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে কস্ট প্লাস পদ্ধতির নামে ভোক্তাদের ওপর একের পর এক মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপানো হয়েছে। অথচ এর দায় কেউ নেয়নি। তিনি বলেন, “সরকারকে কেবল কস্ট বেসিসে, মুনাফামুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেবা দিতে হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি কোনো বিলাসপণ্য নয়, এটি মানুষের মৌলিক প্রয়োজন।”

বক্তারা বলেন, দায়মুক্তি আইনের সুযোগ নিয়ে গত কয়েক বছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে একের পর এক বিতর্কিত চুক্তি করা হয়েছে। এসব চুক্তির মাধ্যমে জনগণের অর্থের অপচয় হয়েছে এবং একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী অযৌক্তিক সুবিধা ও মুনাফা অর্জন করেছে। দায়মুক্তি আইন বহাল থাকায় এসব চুক্তির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা বা দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনা সম্ভব হয়নি, যা খাতে সুশাসনের বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মানববন্ধনে দাবি জানানো হয়, সরকার যেন যৌথ মালিকানায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবসা-বাণিজ্যে জড়িত না হয় এবং সরকারি মালিকানাধীন কোনো কোম্পানি বা জনগণের সম্পত্তির শেয়ার ব্যক্তি খাতে হস্তান্তর না করে। বক্তারা বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে তরল জ্বালানির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমিয়ে স্বল্পমেয়াদেই এর ব্যবহার সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে। পাশাপাশি দেশীয় ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর ওপর জোর দেন তারা।

মানববন্ধনে জ্বালানি অপরাধীদের বিচারের দাবিতে বক্তারা বলেন, বিগত ১৫ বছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থায় যে বিপুল পরিমাণ অর্থ তসরুপ ও আত্মসাৎ হয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ হিসাব নির্ধারণ করতে হবে। যাঁদের কর্তৃত্বে এসব অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে এবং যাঁরা লাভবান হয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকে ওই অর্থ ও ক্ষতিপূরণ আদায় করে জ্বালানি অপরাধী হিসেবে বিচারের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে আদায়কৃত অর্থ দিয়ে ‘এনার্জি প্রাইস স্ট্যাবিলাইজড ফান্ড’ গঠনের দাবি জানানো হয়।

বক্তারা আরও বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন ২০০৩-এর মৌলিক সংস্কার জরুরি। কমিশনকে স্বাধীন ও কার্যকর করতে না পারলে এই খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। পাশাপাশি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উন্নয়নে বিনিয়োগকারীদের জন্য বৈষম্যহীন পরিবেশ ও সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তারা। কর্মসূচি শেষে ক্যাব নেতারা জানান, ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দায়মুক্তির সংস্কৃতি বন্ধে তারা ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন।

 

শেয়ার করুন...

আরও পড়ুন...

ফেসবুকে আমরা…