Masud Rana
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিটের প্রযুক্তিগত সহায়তায় উদ্ধারকৃত ৮৭টি হারানো মোবাইল ফোন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকৃত মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর ৩টায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরের সভাকক্ষে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের উদ্যোগে এ মোবাইল ফোন হস্তান্তর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোনগুলো মালিকদের হাতে তুলে দেন আরএমপি কমিশনার ড. মো. জিল্লুর রহমান।
আরএমপি সূত্র জানায়, আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় সাইবার ক্রাইম ইউনিট মোট ৮৭টি হারানো মোবাইল ফোন শনাক্ত ও উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এসব মোবাইল ফোন শুধু রাজশাহী মহানগরী এলাকা থেকেই নয়, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। সংশ্লিষ্ট থানায় দায়ের করা সাধারণ ডায়েরির (জিডি) ভিত্তিতে মোবাইল ফোনগুলো শনাক্ত ও উদ্ধার করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে পুলিশ কমিশনার ড. মো. জিল্লুর রহমান বলেন, পুলিশ শুধু দৃশ্যমান আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজই করে না, এমন অনেক কার্যক্রম রয়েছে যা সাধারণ মানুষের চোখে পড়ে না। অনেক সময় পুলিশের কিছু কার্যক্রম নেতিবাচক মনে হলেও বাস্তবে তা নাগরিকের জীবন, নিরাপত্তা ও সম্পদ রক্ষার স্বার্থেই পরিচালিত হয়।
তিনি বলেন, ট্রাফিক চেকপোস্টে হেলমেট পরিধান নিশ্চিতকরণ ও যানবাহনের কাগজপত্র যাচাইয়ের উদ্দেশ্য দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও জীবন রক্ষা করা। তাই হেলমেট ব্যবহার নাগরিকের নিজের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত জরুরি।
মাদকবিরোধী কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা বিভাগ থাকলেও পুলিশ নিয়মিতভাবে এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তবে মাদক নির্মূলে শুধু পুলিশের একক ভূমিকা যথেষ্ট নয়; পরিবার ও সমাজের সম্মিলিত সচেতনতা অপরিহার্য। তিনি আরও বলেন, নাগরিকদের কাছ থেকে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য পেলে পুলিশ দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে। তথ্য দেওয়ার জন্য সরাসরি ফোনের পাশাপাশি মেসেজ বা অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করা যাবে। এ জন্য আরএমপির ফেসবুক পেজ, হটলাইন নম্বর ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগাযোগ নম্বর চালু রয়েছে।
পুলিশ কমিশনার বলেন, সাম্প্রতিক উদ্ধার ও অভিযানগুলো প্রমাণ করে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ নিরলসভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। পুলিশের ভালো কাজগুলোতে নাগরিকদের উৎসাহ ও সহযোগিতা পেলে এসব কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, নাগরিক সহযোগিতার মাধ্যমে রাজশাহী মহানগরকে একটি নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
মোবাইল ফোন ফেরত পাওয়া মালিকরা আরএমপির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং এ জনবান্ধব ও প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তাদের মতে, এ উদ্যোগের মাধ্যমে শুধু হারানো সম্পদই ফিরে পাওয়া যায়নি, বরং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থাও আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মো. ফারুক হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম); মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, পিপিএম, উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্তসহ আরএমপির ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ।