logo

সময়: ১১:৪১, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১১:৪১ অপরাহ্ন

সর্বশেষ খবর

আরডিএর নির্দেশ অমান্য করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কাজলায় সাততলা ভবনের অবৈধ নির্মাণ কাজ শুরু

Ekattor Shadhinota
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ | সময়ঃ ১০:১৩
photo
আরডিএর নির্দেশ অমান্য করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কাজলায় সাততলা ভবনের অবৈধ নির্মাণ কাজ শুরু

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীর
কাজলা এলাকায় ইমারত নির্মাণ আইন অমান্য করে সাততলা
ভবনের অবৈধ নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু করেছে মালিকপক্ষ।
সোমবার সকাল থেকে বন্ধ থাকা ভবনটিতে আবারও
শ্রমিকরা কাজ শুরু করলে এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর ভবনের মালিকপক্ষের সাতজনের
বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করে রাজশাহী
উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ)। আরডিএর অথরাইজড
অফিসার মো. আব্দুল্লাহ আল তারিক স্বাক্ষরিত এক
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভবনটি ইমারত নির্মাণ আইন
১৯৫২এর ৩(খ) ধারার বিভিন্ন শর্ত ভঙ্গ করে নির্মাণ করা
হচ্ছে।
নোটিশ ও আরডিএর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ভবনের ভিত্তি ও
প্রতিটি তলার নির্মাণ পরিদর্শনের কোনো প্রমাণপত্র
দাখিল করা হয়নি। নির্মাণস্থলে বাধ্যতামূলক তথ্য বোর্ড
স্থাপন করা হয়নিÑযা অনুমোদনের ২ নম্বর শর্ত লঙ্ঘন। ভবনের
চারদিকে অনুমোদিত নকশার বাইরে অতিরিক্ত নির্মাণ করা
হয়েছেÑএটি অনুমোদনের ১৬ নম্বর শর্তের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
এ কারণে নোটিশে নির্দেশ দেওয়া হয়, পরবর্তী আদেশ না
দেওয়া পর্যন্ত নির্মাণ কাজ পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হবে।
পাশাপাশি মতিহার থানার ওসিকে নির্মাণ বন্ধে
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
নোটিশে নির্ধারিত দিনে গত ৪ ডিসেম্বরÑমালিকদের
অনুমোদিত নকশা, দলিল, খতিয়ান ও জাতীয় পরিচয়পত্রসহ
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আরডিএ দপ্তরে হাজির হওয়ার
কথা বলা হলেও সেদিন আরডিএর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
বাহিরে থাকায় বিষয়টি অমীমাংসিত থাকে।

বাদী মো. সেলিম রেজা খোকন জানান, ৪ তারিখের পর ভবনের
কাজ বন্ধ ছিল। হঠাৎ সোমবার সকালে দেখি আবার লেবার-
মিস্ত্রি কাজ করছে। এরপর আমি মতিহার থানায় বিষয়টি
জানাই। কিন্তু সেখানে বলা হয়, এটা আরডিএর বিষয়;
আরডিএ ম্যাজিস্ট্রেট পাঠালে আমরা সহযোগিতা করব।
পরে তিনি আরডিএ অফিসে গিয়ে বিষয়টি জানান।
অথরাইজড অফিসার মো. আব্দুল্লাহ আল তারিক জানান,
ভবন নির্মাণের জন্য মালিকদের কোনো ধরনের মৌখিক বা
লিখিত অনুমতি দেওয়া হয়নি।
ভবন মালিকদের একজন মো. এনামুল হক দাবি করেন,
আরডিএর অনুমতির বিষয়ে তিনি জানেন বলে উল্লেখ করলেও
বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। গায়ের জোরে কাজ শুরু
করেছেনÑএমন প্রশ্নে তিনি বাদীর সাথে বসে আপোষ-
মীমাংসা করে নিবেন বলে জানান।
আরডিএ সূত্র জানায়, রাজশাহী নগরীতে বহুতল ভবনের
সংখ্যা তিন শতাধিক। সর্বশেষ জরিপে ৫৮টি ভবনকে
ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
অনুমোদনবিহীন ভবন নির্মাণের ঘটনায় ইতোমধ্যে ২৬১
জন ভবন মালিককে শোকজ এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অনেক ভবনের বর্ধিত অংশ ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
সম্প্রতি ভূমিকম্পের পর নগরবাসীর উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
তারা বলছেন, নিয়ম না মেনে গড়ে ওঠা বহুতল ভবনগুলো বড়
ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করছে।
রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী
পরিচালক দিদারুল আলম বলেন, বহুতল ভবনে অগ্নিনির্বাপক
ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক; কিন্তু বেশিরভাগ মালিক তা মানছেন
না।
আরডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল
তারিক বলেন, নিয়ম ভঙ্গ করে যেসব ভবন নির্মাণ করা
হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে
অবৈধ অংশ ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, কাজলা এলাকার এই সাততলা ভবনটি
নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে কাজ শুরু করা নগরীতে
অবৈধ নির্মাণ দমনে আরডিএর কার্যক্রমকে চ্যালেঞ্জের
মুখে ফেলছে।
এ ঘটনার পর এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে এবং দ্রুত
আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।

শেয়ার করুন...

আরও পড়ুন...

ফেসবুকে আমরা…