logo

সময়: ০৩:৩২, শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫

৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ০৩:৩২ অপরাহ্ন

সর্বশেষ খবর

ভূমিকম্পে রাবির শেরে বাংলা হল হেলে পড়ার অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও নিরাপত্তার দাবি

Masud Rana
২১ নভেম্বর, ২০২৫ | সময়ঃ ১১:০৩
photo
ভূমিকম্পে রাবির শেরে বাংলা হল হেলে পড়ার অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও নিরাপত্তার দাবি

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের
(রাবি) শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের একটি অংশ ভূমিকম্পে হেলে
পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালের ভূমিকম্পের পর হলের দেয়ালে নতুন করে
ফাটল দেখা দেওয়ায় এবং ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ায় শিক্ষার্থীদের
মধ্যে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা ও দ্রুত
হল পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন হলের আবাসিক ছাত্ররা।
সরেজমিনে ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার বেলা
১১টার দিকে হলের প্রধান ফটকে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন
শিক্ষার্থীরা। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তাঁরা
উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় সেখানে
উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন ও
প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান। পরে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তা ও রাকসু ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ, এজিএস
এস এম সালমান সাব্বিরসহ ছাত্রসংসদের প্রতিনিধিরা হলটি
পরিদর্শন করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ও আতঙ্ক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ১৯৬২
সালে প্রতিষ্ঠিত এই হলটি কাঠামোগতভাবেই দুর্বল। কোনো
আরসিসি কলাম ছাড়াই ইটের পিলারের ওপর ছাদ দিয়ে তৈরি এই
ভবনটি দীর্ঘদিন ধরেই জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী খালিদ আল হাসান বলেন, ঘুম থেকে
ওঠার পরই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এরপর দেখি হলের পশ্চিম ব্লকের একাংশ
একপাশে দেবে গেছে।
আমরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়েছিলাম, কিন্তু
প্রশাসনের কথাবার্তা ছিল হতাশাজনক। তাঁরা আমলাতান্ত্রিক
জটিলতার দোহাই দিচ্ছেন। আমাদের ৩০০ ছাত্রের জীবনের চেয়ে কি
আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বড়?
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, ভূমিকম্পের প্রায় দেড়-দুই
ঘণ্টা পর হল প্রাধ্যক্ষ স্যার এসেছেন। ভূমিকম্পে যদি ভবন ধসে
কোনো প্রাণহানি হতো, তবে তার দায়ভার কে নিত? আমরা
অবিলম্বে নিরাপদ কোনো স্থানে স্থানান্তরের দাবি জানাচ্ছি।

মারুফ হোসেন জেমস নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ভূমিকম্পের
সময় মনে হচ্ছিল ছাদ ভেঙে পড়বে। বিভিন্ন রুমের প্লাস্টার খসে
পড়ছে। আমরা ১০ ফুট ওপর থেকে ধসে পড়ার আতঙ্কে আছি।
প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, আমাদের সন্তানের মতো বিবেচনা
করে আজ রাতেই যেন নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা
হয়।শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে প্রক্টরকে সঙ্গে নিয়ে হল পরিদর্শন
শেষে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন বলেন, ইতিপূর্বেও আমরা
ইঞ্জিনিয়ারিং টিম নিয়ে এই হল পরিদর্শন করেছিলাম। তখনই মনে
হয়েছিল বিল্ডিংটা একটু হেলে গেছে এবং ফাটল ধরেছে। আজকের
ভূমিকম্পের পর অবস্থা আরও খারাপ মনে হচ্ছে। বিষয়টি গভীর, তাই
আমরা ইঞ্জিনিয়ারিং টিমকে টেকনিক্যাল অ্যাসেসমেন্টের
দায়িত্ব দিয়েছি।
তিনি আরও জানান, জুমার নামাজের পর উপাচার্যসহ জরুরি
বৈঠকে বসা হবে। হলটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হবে কি না এবং
ছাত্রদের কীভাবে পুনর্বাসন করা যায়, সে বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত
নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ মোঃ শরিফুল ইসলাম
বলেন, সরজমিনে দেখে নিশ্চিত হয়েছি হলটি নিঃসন্দেহে
ঝুঁকিপূর্ণ। এই অবস্থায় ছাত্ররা বা আমরা কেউ নিরাপদ নই। তবে
ছাত্রদের পরীক্ষা ও টিউটোরিয়াল চলায় হুট করে হল বন্ধ করা বা তাদের
বাড়ি পাঠানো সম্ভব নয়। জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রশাসন ও হল প্রশাসন যৌথভাবে বসে ছাত্রদের নিরাপত্তার বিষয়টি
অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রুত স্থানান্তরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
ততক্ষণ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান হল
প্রাধ্যক্ষ।

শেয়ার করুন...

আরও পড়ুন...

ফেসবুকে আমরা…