Masud Rana
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর
ইউনিয়নের বাবুডাইং গ্রামে আদিবাসী কোল সম্প্রদায়ের পাঁচটি পরিবারকে
উচ্ছেদের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে জাতীয় আদিবাসী
পরিষদের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আদালতের একতরফা রায়ের ভিত্তিতে সম্প্রতি আদিবাসী
পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এতে ঐ পরিবারগুলো ঘরবাড়ি হারিয়ে বর্তমানে
নিকটবর্তী একটি বাঁশঝাড়ের নিচে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
বক্তারা অবিলম্বে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোর পুনর্বাসন, তাদের জমির মালিকানা
ফিরিয়ে দেওয়া এবং এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর একজন সদস্য রুমালী হাসদা জানান, আদালতের কোনো
নোটিশ ছাড়াই তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়। এর ফলে তারা খাট, চেয়ার,
টেবিলসহ কোনো আসবাবপত্রই বের করতে পারেননি। তিনি দাবি করেন, যে জমি
থেকে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে তা তাদের পৈতৃক সম্পত্তি। ১৯৫০ সালের
প্রজাস্বত্ব আইনের ৯৭ ধারায় আদিবাসীদের কাছ থেকে জমি কেনার জন্য
প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজন হলেও এক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়নি বলে তিনি
অভিযোগ করেন।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি গণেশ মার্ডির
সভাপতিত্বে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের
কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিমল চন্দ্র রাজোয়ার, বরেন্দ্র উন্নয়ন প্রচেষ্টার পরিচালক
ফয়জুল্লাহ্ধসঢ়; চৌধুরী, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান হাসিবুল, জাতীয়
আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি রাজকুমার শাও এবং
প্রেসিডিয়াম সদস্য ক্রিষ্টিনা বিশ্বাস।
এছাড়াও সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সহ-
সাংগঠনিক সম্পাদক রূপচাঁদ এক্কা, সাংবাদিক মাহবুব জামান কাদেরী, জাতীয়
আদিবাসী পরিষদের সদস্য আন্দ্রিয়াস বিশ্বাস, মাসাউসের পরিচালক মেরিনা
হাসদা, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ রাজশাহী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুকুল
বিশ্বাস, রাজশাহী মহানগীর সাধারণ সম্পাদক ছোটন সরদার, মহিলা পরিষদের
সাধারণ সম্পাদক নিলুফা আহম্মেদ, ডাসকোর রুহুল আমিন এবং নলিন সরদার।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মধ্যে রুমালী হাসদা ছাড়াও ভুট্টু কিস্কু, সুজন
সরেন এবং সনাতন সরেন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, প্রান্তিক আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় সরকারের বিশেষ মনোযোগ
দেওয়া প্রয়োজন এবং তাদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। এ ধরনের
উচ্ছেদ অমানবিক এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন তারা।