নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীতে চার বছরের এক
শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত যুবককে আটক করে থানা থেকে
ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে রাজপাড়া থানার ওসির বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় মহানগরীর রাজপাড়া থানার ফুড অফিসের
পাশে অভিযুক্ত সোহানকে তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
আটক সোহান (১৭), সে রাজপাড়া থানার ফুড অফিস সংলগ্ন এলাকার
পারভেজ আলীর ছেলে। ভুক্তভোগী শিশু একই এলাকার সেন্টু আলীর মেয়ে।
ভুক্তভোগীর পিতা সেন্টু আলী জানায়, অভিযুক্ত সোহান এবং ভুক্তভোগী
একই বিল্ডিং-এ বসবাস করেন। নিচতলায় থাকেন অভিযুক্ত সোহান ও তার
পরিবারবর্গ এবং দ্বিতীয় তলায় ভুক্তভোগীর সেন্টু আলী তার পরিবার নিয়ে
বসবাস করেন।
গত সোমবার (২০ আক্টোবর), সন্ধ্যার দিকে তার মেয়ে নিচে খেলা করছিলো।
ওই সময় সোহান শিশুটিকে তার বসতঘরের একটি রুমে নিয়ে যায় এবং
হাত পা বেঁধে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। শিশুটির চিৎকার শুনে সোহানের
বসতঘরে প্রবেশ করে তাকে উদ্ধার করে শিশুটির মা ও অভিযুক্ত সোহানের বোন
নুসরাত। তবে পালিয়ে যায় সোহান। এরই মধ্যে শিশুটির মা ও বাবা’কে
বিভিন্ন ভাবে অপোষ-মিমাংসার জন্য তদবির করে অভিযুক্ত সোহানের
পরিবারের লোকজন। সেই ২০ অক্টোবর খেকে নিজের সাথে যুদ্ধ করে
আসছিলে শিশুটির বাবা সেন্টু আলী। শেষে পর্ষন্ত তিনি নিজের কাছে
হেরে যান। এই ধরনের জঘণ্য অপরাধ মেনে নিতে পারছিলেন না। সকল বাঁধা
তদবির উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে তিনি বাদী হয়ে
রাজপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এদিন বিকাল সাড়ে ৪টায়
অভিযুক্ত সোহানকে তার বাড়ি থেকে আটক করে রাজপাড়া থানা পুলিশ।
ভুক্তভোগী সেন্টু আলীর অভিযোগ, থানায় আমার চার বছরের কণ্যা শিশুকে
প্রায় ৪০ মিনিট জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। অথচো অভিযুক্তকে মাত্র ৪/৫
মিনিট জিজ্ঞাসাবাদ করে অজ্ঞাত কারনে সন্ধ্যার দিকে থানা থেকে ছেড়ে
দিয়েছেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হাবিবুর রহমান।
সেন্টু আলী আরও বলেন, অভিযুক্ত সোহানকে থানা থেকে ছেড়ে দিয়ে ওসি
আমাকে বলেন, আমি মামলা নিব না। আপনি চাইলে কোর্টে মামলা করতে
পারেন। আমরা তদন্ত করবো।
অথচ ঘটনার পরের দিন অর্থাৎ গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় অভিযুক্ত
সোহানকে আটক করে স্থানীয়রা এবং শিশুটির পরিবারের লোকজন। ওই সময়
একটি ভিডিও ধারণ করা হয়। ভিডিওতে দেখা ও শোনা যায়, সোহান কানে
ধরে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করছে এবং সোহান নিজ মুখে বলছে এই ধরণের
কাজ আমি আর করবোনা।
সরে জমিনে গিয়ে একাধীক স্থানীয়দের কাছে জানা যায়, মাত্র ৪ বছরের
নাবালিকা শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে নিজ মুখে স্বীকার করা
সোহানকে আটক করে থানা থেকে ছেড়ে দিয়েছেন ওসি। এ নিয়ে
এলাকাবাসীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), মোঃ
হাবিবুর রহমান এ প্রতিবেদকে বলেন, ঘটনা সত্য না। পারিবারিক ও
জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ওই যুবককে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে
শিশুটির পরিবার। চার বছরের শিশুকে দীর্ঘ প্রায় ৪০ মিনিটি
জিজ্ঞাসাবাদের কারন জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দেননি। তবে ইন্সপেক্টর
(ওসি তদন্ত), মোঃ আব্দুল আলিম রাগাম্বিত হয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন,
জমি সংক্রান্ত কারনে পিতা তার মেয়েকে ব্যবহার করেছে। সেকেন্ড অফিসার
এসআই আজাহার তার অফিসারের পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন।