গাইবান্ধা থেকে আঃ খালেক মন্ডল ঃ
প্রয়োজনীয় সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত কোচাশহর-ফাঁসিতলা সড়কটি যানবাহন চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার যাত্রীকে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কোচাশহর চারমাথা মোড় থেকে ফাঁসিতলা বাজার পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার সড়কটি উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত সড়ক। গোবিন্দগঞ্জ-মহিমাগঞ্জ সড়কের গোবিন্দগঞ্জ চারমাথায় যানজট দীর্ঘ হলে মহিমাগঞ্জ থেকে বগুড়া, দিনাজপুর ও রংপুরমুখী যানবাহনগুলো বিকল্প হিসেবে এ সড়কটি ব্যবহার করে থাকে। ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের যানবাহন এ সড়ক দিয়ে মহিমাগঞ্জ হয়ে সাঘাটাসহ আশেপাশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করে। এছাড়া উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের শাখা সড়কে যেতে হলে এ সড়কটি ব্যবহার করতে হয়। এলজিইডি থেকে কয়েক বছর আগে সড়কটি সংস্কার করা হয়। এরপর থেকে ওই সড়কে আর কোনো উন্নয়ন হয়নি।
মহিমাগঞ্জ এলাকায় ভারী শিল্প কারখানা থাকায় এ সড়কে যানবাহনের চাপ বেশি। ব্যস্ত এ সড়কটিতে প্রতিদিন ট্রাক, সিএনজি, প্রাইভেট কার, নসিমন, ইজিবাইক, অটোরিকশাসহ অসংখ্য যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কের বিভিন্ন স্থানে অনেক আগেই কার্পেটিং উঠে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সড়কটির অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে পড়েছে।
হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে চাঁদপাড়া বাজার পর্যন্ত সড়কটির অনেক জায়গা ভেঙেচুরে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ধর্মা কাজীপাড়া অংশে সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। খানাখন্দে পড়ে যানবাহন উল্টে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। কোনো যানবাহন গর্তে আটকে দীর্ঘ যানজটেরও সৃষ্টি হয়ে থাকে। সড়কের এই বেহাল অবস্থার কারণে সেখানে যানবাহন চলাচলও কমছে। এতে প্রতিদিন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ছাড়াও এলাকার সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। সড়কটি মেরামতের জন্য এলজিআইডি কর্তৃপক্ষকে বার বার অবহিত করেও কোনো সাড়া মিলছে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহাদুল ইসলাম বলেন, এই সড়কটি আগে রংপুর চিনি কলের আওতায় ছিল, তখন তারা নিয়মিত সড়কের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করত। এখন সড়কটির বেহাল থাকায় প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষ বহু কষ্টে যাতায়াত করে। এই সড়কটি দ্রুত মেরামতের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
কোচাশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, কোচাশহর-ফাঁসিতলা সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। আমি এই সড়ক মেরামতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। ইতিমধ্যে সড়কটির টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। সম্প্রতি ভারী বর্ষণ হওয়ায় সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এমতাবস্থায় আমি জরুরী ভিত্তিতে ইউনিয়ন পরিষদের ফান্ড থেকে সড়কটি মেরামত করার চেষ্টা করবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুবুল হক বলেন, আমি কোচাশহর-ফাঁসিতলা সড়কে খানাখন্দের বিষয়ে শুনেছি। সাধারণ মানুষের দূর্ভোগের কথা মাথায় রেখে সড়কটি দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।