logo

সময়: ১২:২৬, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫

২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১২:২৬ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ খবর

কয়লাখনির ডেটোনেটর বিস্ফোরণে কবজি উড়ে গেল শিশুর

D.M.R. BABUL
০৯ জুলাই, ২০২৫ | সময়ঃ ০৩:৪২
photo
কয়লাখনির ডেটোনেটর বিস্ফোরণে কবজি উড়ে গেল শিশুর

রুকুনুজ্জামান পার্বতীপুর প্রতিনিধিঃ
বড়পুকুরিয়ার কয়লাখনির পাশে পরিত্যক্ত এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (ডেটোনেটর) বিস্ফোরণে এক শিশুর ডান হাতের কব্জি উড়ে গেছে।  
মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির সংলগ্ন চৌহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিশুর নাম ইলিয়াস আলী (১০)। সে চৌহাটি গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে, সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার নাজেরা বিভাগের শিক্ষার্থী।
স্থানীয়রা জানান, আজ বেলা ১২ টার দিকে ইলিয়াস কয়লাখনির ডাম্পিং এলাকা থেকে একটি ধাতব বস্তু পেয়ে তা বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে সেই ধাতব বস্তুটি মোবাইলের নষ্ট ব্যাটারির সঙ্গে সংযোগ দিলে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে বিস্ফোরণে তার ডান হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত হয়।
পরিবারের সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জানা গেছে, কয়লাখনির প্রাচীর ঘেঁষে তার কাঁটা দিয়ে ঘেরা খনির ডাম্পিং এরিয়া। এখানে খনির বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ফেলা হয়। এ সব বর্জ্য থেকে কয়লার সন্ধানে এলাকার লোকজন ওই ডাম্পিং এরিয়ায় প্রবেশ করে যতসামান্য কয়লা পেয়ে থাকে। এ সব বজ্যর সঙ্গে অনেক সময় মেলে এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস। পাশের গ্রাম চৌহাটির অনেকেই এই ডাম্পিং পয়েন্ট থেকে কয়লা সংগ্রহ করতে গিয়ে ওইসব এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস পেয়ে থাকে। তারা এর বিশদ কিছু জানে না। অনেক সময় তারা এগুলো নিয়ে নিজেদের বাড়িতে ফেলে রাখে।
বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ভূগর্ভস্থ একজন শ্রমিক বলেন, ‘এগুলো ডেটোনেটর। খনির অভ্যান্তরে বা ভূগর্ভে যেসব স্থানে মেশিন দিয়ে কয়লা কাটা সম্ভব হয় না। সেইসব স্থানে এসব ডেটোনেটর স্থাপন করে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কয়লা সংগ্রহ করা হয়।’
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। স্থানীয়রা দাবি তুলেছেন, খনি এলাকার পুরনো বিস্ফোরক উপাদান ও পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি অপসারণে প্রশাসনের আরও তৎপরতা দরকার, যেন এমন দুর্ঘটনা আর না ঘটে। এ সব দ্রব্য কিভাবে সহজেই মানুষের কাছে পৌছে যাচ্ছে সেটাও দেখা দরকার খনি কর্তৃপক্ষের।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) খান মো. জাফর সাদিক বলেন, ‘এটি ডেটোনেটর। খনির ভূগর্ভে কয়লা উত্তোলনের ক্ষেত্রে বিস্ফোরনের কাজে ব্যবহার করা হয়। এগুলো খুবই স্পর্শকাতর। এগুলো কোনটি অকেজো এবং কোনটি তাজা তা সাধারণভাবে কেউ বুঝতে পারার কথা নয়। তাছাড়া বাহিরের পাওয়া ডেটোনেটরে কোনো সংযোগ নেই। তবে এগুলো ডাম্পিং পয়েন্ট থেকেই কোনো না কোনোভাবে ধাতব বস্তু হিসেবে গ্রামবাসী সংগ্রহ করেছে। বিষয়টি আগে কেউ আমাদের নজরে আসেনি। ঘটনার পর আমরা জানতে পেয়ে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। 
আহত শিশুর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগে তার চিকিৎসা চলুক। পরে তার বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি সর্বোচ্চ সহযোগীতা করবে এবং পাশে থাকবে।’

শেয়ার করুন...

আরও পড়ুন...

ফেসবুকে আমরা…