logo

সময়: ০৯:০৮, সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫

৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ০৯:০৮ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ খবর

পবা উপজেলার রামচন্দ্রপুর ভূমি কর্মকর্তা কামাল বহাল তবিয়্যতে

Ekattor Shadhinota
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ | সময়ঃ ১০:২১
photo
পবা উপজেলার রামচন্দ্রপুর ভূমি কর্মকর্তা কামাল বহাল তবিয়্যতে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী: রাজশাহীর পবা উপজেলার রামচন্দ্রপুর
ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা কামাল হোসেনের
বিরুদ্ধে ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, দালালদের মাধ্যমে সাধারণ
মানুষকে হয়রানি এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের মতো গুরুতর অভিযোগ
রয়েছে।
রাজশাহীর পবা উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি
কর্মকর্তা (নায়েব) কামাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী দালাল
সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ
হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি
নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অফিসের প্রতিটি কাজে টাকার খেলা
চলছে। নামজারি, খাজনা আদায়, জমির কাগজ যাচাই কিংবা নথিপত্র
সংশোধনের মতো কোনো কাজই ঘুষ ছাড়া সম্পন্ন হয় না বলে জানা
গেছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, সরকারি নির্ধারিত ফি পরিশোধ করার পরও কামাল
হোসেনের মনোনীত দালাল চক্র অতিরিক্ত ঘুষ দাবি করে। কেউ প্রতিবাদ করলে
তাদের ফাইল মাসের পর মাস আটকে রাখা হয় অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে জটিলতা
তৈরি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ফাঁদে ফেলা হয়। এর ফলে সাধারণ মানুষ চরম
হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, রামচন্দ্রপুর ভূমি অফিসের এই
অনিয়ম-দুর্নীতি শুধু প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করছে না, বরং সাধারণ
মানুষকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করছে। তারা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা
কামাল হোসেনকে দ্রুত অপসারণ ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি
জানিয়েছেন।
এদিকে, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে ভূমি মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি
দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রেখেছেন স্থানীয়রা।
তবে এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা
হয়নি বলে জানা গেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে এই ভূমি কর্মকর্তার প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়ার একটি
ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলেও বহাল তবিয়্যতে রয়েছেন
ভূমি কর্মকর্তা কামাল হোসেন।
কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের
রহস্যজনক নীরবতা স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে এবং
সুশীল সমাজের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। সাধারণ মানুষ এই প্রকাশ্য
কেলেঙ্কারির পরেও কেন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে আলোচনা-
সমালোচনা করছেন বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।

ভিডিওর ভিডিও সহ সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ভূমি কর্মকর্তা
কামাল হোসেন ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন, ভিডিও’র বিষয়ে এক-দু মাস আগেই
অফিসিয়ালি ফয়সালা হয়ে গেছে। ভিডিও তো ডিলিট হয়ে যাওয়ার কথা।
আপনাকে আবার কে ভিডিও দিলো। আপনি ফোন রাখেন বলে তিনি ফোন
কেটে দেন।#
এদিকে, ৮০ লাখ টাকা রাজস্ব আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক এক
ক্যাশিয়ারের বিরুদ্ধে মামলা এবং বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বদলি করার মতো ঘটনাও ঘটেছে।
পবা উপজেলা ভূমি অফিসের সাবেক নাজির কাম ক্যাশিয়ার কাজেম আলীর
বিরুদ্ধে প্রায় ৭৯ লাখ ২৬ হাজার ২৮১ টাকা সরকারি রাজস্ব আত্মসাতের
অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করেছে।
দুদক জানায়, কাজেম আলী ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে
থাকাকালীন ডিসিআরের মাধ্যমে আদায়কৃত রাজস্বের অর্থ ট্রেজারি
চালানে টেম্পারিং এবং টাকার অঙ্ক বিকৃত করে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ
আত্মসাৎ করেন। নিরীক্ষায় বিষয়টি প্রথম ধরা পড়ার পর দুদকের অনুসন্ধানেও
এর প্রমাণ মেলে।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে দুদকের রাজশাহী
সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বাদী হয়ে
মামলাটি দায়ের করেন। 

শেয়ার করুন...

আরও পড়ুন...

ফেসবুকে আমরা…