মোঃ জহুরুল ইসলাম, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ ১৮ জানুয়ারি ২৪ ইং
সু-উচ্চ দ্বিতল ভবনের বারান্দায় ছোট বড় ১৫/২০টি মৌচাক। সারা দিন হাজার হাজার উড়ন্ত মৌমাছির ভোঁ-ভোঁ শব্দ।
ওই মৌচাকের নিচেই বাড়ীর শিশু কিশোর ও বয়স্কদের নির্ভয়ে অবাধ বিচরণ। বাড়ির মহিলারা করছেন রান্না-বান্না সহ অন্যান্য কাজ। এতে মৌমাছিরা কোন ক্ষতি করছে না বাড়ির লোকেদের।
বাড়ির লোক জনদের চলাফেরা করার সময় পরিবারের সদস্যরা মৌচাকে মাথা বা হাত লাগলেও মাছি গুলো কামড় বা হুল ফোটায় না। এমন একটি বাড়ী জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের পাঁচগাছি গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের বাড়ি। বাড়িটির দ্বিতীয় তলার বারান্দায় ১৫/২০টি মৌমাছির (চাক) বাসা বেঁধেছে। চাকগুলো আস্তে আস্তে লম্বা ও বড় হয়ে নিচের দিকে ঝুলে পড়েছে। এ যেন মৌমাছি ও মানুষের অন্য রকম এক ভালবাসা। মৌমাছি ও মানুষের বসবাস দেখতে প্রতিদিনই গ্রামের বিভিন্ন বয়সী মানুষ আসেন ওই বাড়িতে।
মৌচাক দেখতে আসা প্রতিবেশী কয়েক জন বলেন, চেয়ারম্যান বাড়ীতে মানুষ আর মৌমাছি একই সঙ্গে বসবাস করছে শুনে দেখতে এসেছি ঘুরে ঘুরে দেখলাম সত্যি অবাক করার মতো বিষয়। তারা বলেন, মৌছামাছি উড়ে আমাদের গায়ে এসে পড়লেও কাউকে হুল ফোটাচ্ছে না। এরকম ঘটনা আমরা আগে কখনও দেখিনি। চেয়ারম্যানের ছেলে মোঃ ইদ্রিস আলী বলে, মৌমাছিগুলো চাক বাঁধার পর থেকে বারান্দায় চলাফেরা, কাপড় শুকানো ও রান্না বান্নার কাজ করা হয়। এসময় চাকে কাপড় ও হাত লাগলেও মৌমাছিগুলো কামড়ায় না।
বাড়ির মালিক হাবিবুর রহমান বলেন, বছরের পর বছর মাছিগুলো চাক বেঁধে আছে। এখন পর্যন্ত কাউকে কামড়ায়নি। অনেক মানুষ মধু চাক থেকে মধু সংগ্রহ করার জন্য এসেছিল। আমি মধু সংগ্রহ করতে দেয়নি। যেহেতু মৌমাছিগুলো আমার বাড়ী নিরাপদ মনে করে বাসা বেঁধেছে এবং এরা যেহেতু আমাদের কোন ক্ষতি করে না সে কারনে মৌমাছিগুলোকে আমরা পরিবারের সদস্যের মতোই মনে করি।
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নিয়ায কাযমির বলেন, মৌমাছি গুলো যেখানে নিরাপত্তা, বাঁচার পরিবেশ ও খাবাবের ভালো সু-ব্যবস্থা পায় সেখানেই তারা বাসা বাঁধে। মৌমাছিকে বিরক্ত বা আঘাত করলে আত্মরক্ষার্থে তারা হুল ফোটায়। মৌচাকে ঢিল ছুড়লে কিংবা আঘাত করলে তারা মানুষকে কামড় দেয় বা বাহুল ফোটাই। মৌমাছির হুলে মানুষের মারা যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। মৌমাছি থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করাটাই ভালো।