logo

সময়: ১০:৩০, শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ খবর

প্রায় বাদের খাতায় ‘মুভমেন্ট পাস’

Ekattor Shadhinota
২৮ এপ্রিল, ২০২১ | সময়ঃ ১০:১০
photo
প্রায় বাদের খাতায় ‘মুভমেন্ট পাস’

নিজস্ব প্রতিনিধি:  -করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর ‘লকডাউন’ বা বিধিনিষেধ ঘেষণা করে সরকার। প্রথমে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করলেও দুই দফা সময় বাড়িয়ে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ৫ মে পর্যন্ত।
তবে এর মধ্যে মার্কেট-শপিংমল খোলসহ শিথিল করে দেওয়া হয় বিভিন্ন বিধি-নিষেধ। জীবন-জীবিকার সমন্বয় করতে কার্যত গণপরিবহন বন্ধ ছাড়া ধাপে ধাপে চালু হয়েছে প্রায় সবকিছুই। এ অবস্থায় মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে চালু হওয়া পুলিশের ‘মুভমেন্ট পাসের’ প্রয়োগ নেই বললেই চলে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিধিনিষেধের শুরু থেকে কঠোরভাবে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হলেও এই পর্যায়ে আর সেই পরিস্থিতিতে নেই। তাই বাধ্য হয়ে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ চেয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর দিকেই নজর দিচ্ছে পুলিশ।
বুধবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সড়কে প্রচুর ব্যস্ততা দেখা যায়। অফিস-মার্কেট, শপিংমলকেন্দ্রিক সকাল-বিকেলে কিছু সড়কে যানজটও লক্ষ্য করা গেছে। শুরু থেকে সড়কের মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপন করা হলেও এদিন তেমনটি দেখা যায়নি।
চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা না থাকলেও বিভিন্ন সড়কে প্রতিবন্ধকতা স্থাপন করার ডিভাইডারগুলো রয়ে গেছে। তবে কোনো কোনো সড়কে চেকপোস্ট পরিচালনা করতে দেখা গেছে পুলিশকে। দিনের প্রথমভাগে বাইক ও প্রাইভেটকার থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ক্রমেই শিথিল হতে দেখা যায়।
দুপুরে সরেজমিনে রাজধানীর বিজয় সরণি থেকে জাহাঙ্গীর গেটগামী সড়কে একটি চেকপোস্ট পরিচালনা করতে দেখা যায়। তবে সাধারণত বাইকচালকদের ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন আটকাতে দেখা যায়নি।
দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা জানান, লকডাউন চলমান থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এখন প্রায় সব অফিস, মার্কেট-শপিংমল খুলে দেওয়া হয়েছে। তাই এসব কেন্দ্রিক মানুষের চলাচল বেড়েছে। এক্ষেত্রে সবাইকে থামিয়ে বের হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া সম্ভব না। তবুও মাঝে মধ্যে সন্দেহভাজন গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা প্রাইভেটকার থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বের হওয়ার উপযুক্ত কারণ বা মুভমেন্ট পাস দেখাতে না পারলে মামলা দেওয়া হচ্ছে।
মোটরসাইকেল চালকদের বেশি আটকানো প্রসঙ্গে তারা জানান, সরকারঘোষিত বিধি-নিষেধের মধ্যে মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন নিষিদ্ধ রয়েছে। এ সময়ে অ্যাপসভিত্তিক মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং সেবা বন্ধ থাকলেও অনেকে চুক্তিভিত্তিক যাত্রী নিয়ে চলাচল করছেন, যা আইনত অপরাধ। এ কারণে আরোহীসহ মোটরসাইকেল চালকদের আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।  
দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য বলেন, অনেককিছু শিথিল করে দেওয়া হলেও মুভমেন্ট পাস থাকলে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছেন। অন্যথায় সন্দেহভাজনরা জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হচ্ছেন।  
এদিন বিকেলে রাজধানীর কলাবাগানে অফিস শেষ করে মিরপুরের বাসায় ফেরার অপেক্ষা করছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী রায়হান। তিনি বলেন, করোনার সংক্রমণ কমাতে কার্যকর লকডাউনের বিকল্প নেই। তবে জীবিকার তাগিদ বিবেচনায় এখন প্রায় সবকিছুই শিথিল করে দেওয়া হয়েছে। যেসব অফিস নিজেদের গাড়িতে করে কর্মীদের আনা-নেওয়া করছে তাদেন তেমন ভোগান্তি নেই। নিজ ব্যবস্থাপনায় যারা চলাচল করছেন তাদের যাতায়াতে অনেক ভোগান্তি হচ্ছে।
বেসরকারি ব্যাংকে চাকরিরত ফয়সাল নামে আরেকজন বলেন, লকডাউন চললেও শুধু গণপরিবহন ছাড়া প্রায় সবই খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে এই রোজার মধ্যে এবং তীব্র গরমে নিয়মিত অফিসগামী নাগরিকরাই সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন।
প্রথম কয়েকদিন সড়কে সড়কে মুভমেন্ট পাসের জন্য পুলিশি তল্লাশির মুখে পড়তে হয়েছিল। এখন আর এমন অবস্থা নেই বলেও জানান তিনি।
পুলিশ জানায়, লকডাউন চলাকালীন সময় জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে চলাচলের জন্য ১৪টি ক্যাটাগরিতে দেওয়া হচ্ছে ‘মুভমেন্ট পাস’। ক্যাটাগরির বাইরেও যাদের বাইরে চলাফেরা প্রয়োজন, তাদের অন্য ক্যাটাগরিতে পাস দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) পুলিশ সদরদপ্তরে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে এক  মতবিনিময় সভায় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, কেনাকাটার ক্ষেত্রে দোকানদার এবং ক্রেতা উভয়কে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। দোকান বা শপিংমলের প্রবেশপথে স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে, শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে একসঙ্গে বেশি লোকের প্রবেশ নিরুৎসাহিত করতে হবে।

শেয়ার করুন...

আরও পড়ুন...

ফেসবুকে আমরা…