Masud Rana
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: ২৯ ঘণ্টা পর রাজশাহীর তানোর
উপজেলায় অবৈধ ব্যক্তিগত সেচ মটরের পরিত্যক্ত বোরিংয়ে আটকা
পড়া দুই বছর বয়সী শিশু সাজিদ হোসেনকে উদ্ধার করেছে ফায়ার
সার্ভিসের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে ৪৫ ফিট
গভীর গর্তে থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার পাঁচন্দর
ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের একটি ধানক্ষেতে
এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানায়, শিশু সাজিদ
বোরিংয়ের মধ্যে পড়ে যায়। বোরিংটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন
এবং ব্যবহৃত নয়; এর ভেতরের সরু গর্তের ব্যাস প্রায় ৮ ইঞ্চি,
গভীরতা প্রায় ৫০ ফুট, যার কারণে শিশুটিকে উদ্ধার করা খুবই
জটিল হয়ে দাঁড়ায়।
শিশুটিকে উদ্ধার করতে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা রাতভর চেষ্টা
চালান। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা
সাফল্যের সঙ্গে তাকে বোরিং থেকে বের করতে সক্ষম হন।
তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শাহীনুজ্জামান
বলেন, দুর্ঘটনার পর থেকে আমরা টানা ২৯ ঘণ্টা চেষ্টা
চালিয়েছি। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে
শিশুটিকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
উদ্ধারের পর দ্রুত শিশু সজিদকে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুর শারীরিক
অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল হলেও পূর্ণ পরীক্ষার পর বিস্তারিত
জানানো হবে।
শিশুটির পরিবার ও প্রতিবেশীরা উদ্ধার সংবাদে স্বস্তি প্রকাশ
করেছেন। তার মা কান্না ভেঙে বলেন, আল্লাহ ও সকলের
সহযোগিতায় আমার ছেলেকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। আমরা
খুবই কৃতজ্ঞ।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা
এড়াতে পরিত্যক্ত বোরিং ও গর্তগুলো নিরাপদ করার বিষয়টি তদারকি
করবেন বলে জানিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা
গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দিদারুল আলম বলেন, গর্তটি
অত্যন্ত সরু ছিল। তাই পাশ থেকে স্কেভেটর দিয়ে মাটি খনন করে
শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুটি জীবিত আছে বলে
জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক। বর্তমানে শিশুটি
চিকিৎসাধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঘটনার পর রাজশাহীর ডিআইজি, রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার
(এসপি), আঞ্চলিক ফায়ার সার্ভিস পরিচালক, তানোর উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা খান, সহকারী কমিশনার
(ভূমি), তানোর থানার ওসি, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন
চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনের সব পর্যায়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে
উপস্থিত ছিলেন।