১৫ টাকায় চাল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজনের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ইউনিয়নবাসীকে সর্তক করে মাইকিং করা হয়েছে।
চালের কার্ড করে দেওয়ার নাম করে একেক জনের কাছ থেকে ৫শ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে কয়েকজন ইউপি সদস্য আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, প্রধানমমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে খোলাবাজারে (ওএমএস) বিক্রির জন্য চালের বরাদ্দ দ্বিগুণ করা হয়েছে। এ কর্মসূচির বাড়তি সুবিধার জন্য দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষ মরিয়া হয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান চঞ্চলের ঘনিষ্ঠ লোকজন। তারা ১০ টাকার চালের কার্ড করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের সাবেক মেম্বর বিপ্লব, ডামোশ গ্রামের মিনারুল ও বেলগাছি গ্রামের শাহিনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। তারা সবাই সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠজন বলে অভিযোগকারীরা জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুর ১নং ওয়ার্ডের রাকিবুল ইসলামের কাছ থেকে এক হাজার, সোনার কাছ থেকে ১১শ, হেলালের কাছ থেকে এক হাজার, মতিয়ারের কাছ থেকে এক হাজার, মনিরের কাছ থেকে এক হাজার, ডাবলুর কাছ থেকে এক হাজার, বেলগাছি ৮নং ওয়ার্ডের লিপুর কাছ থেকে ১১শ, রইতনের কাছ থেকে ১১শ, সোহরাবের কাছ থেকে ৩ হাজার, ৭নং ওয়ার্ডের হাসিনা খাতুনের কাছ থেকে ৫শ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে অনেকের ধারণা পুরো ইউনিয়নজুড়েই এই চক্র চেয়ারম্যানের নাম ভাঙ্গিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
এদিকে, চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ এই চক্রের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বেশ কয়েকজন মেম্বার এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছ লিখিত অভিযোগ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি মেম্বার বলেছেন, এমন পরিস্থিতি সামলাতে চেয়ারম্যানও ব্যর্থ হন। না পেরে তিনি (চেয়ারম্যান) ইউনিয়নবাসীকে সতর্ক করতে ইউনিয়নে মাইকিং করেছেন।
এ ব্যাপারে বেলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান চঞ্চল বলেন, ঘটনা জানার পরে এ ব্যাপারে ইউনিয়নবাসীকে সতর্ক করতে আমি গত ১ সেপ্টেম্বর মাইকিং করেছি। কেউ যেন প্রতারণার শিকার না হয় সেজন্য ইউনিয়নবাসীকে সতর্ক করা হয়েছে। অর্থ হাতিয়ে নেওয়া চক্রের দুয়েকজন তার দলের লোক বলেও স্বীকার করেন চেয়ারম্যান।