logo

সময়: ০৩:৩০, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ০৩:৩০ অপরাহ্ন

সর্বশেষ খবর

রিক্সা র‌্যালি হতে দাবি যুব সমাজকে রক্ষায় ই-সিগারেট ও নিকোটিন পাউচ নিষিদ্ধ করুন

Ekattor Shadhinota
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ | সময়ঃ ১১:২০
photo
রিক্সা র‌্যালি হতে দাবি যুব সমাজকে রক্ষায় ই-সিগারেট ও নিকোটিন পাউচ নিষিদ্ধ করুন

মাত্র কয়েকটি বিদেশি সিগারেট কোম্পানির স্বার্থে অপ্রচলিত ই-সিগারেট ও নিকোটিন পাউচ বৈধ করার পাঁয়তারা করছে কিছু গোষ্ঠী। যে পণ্যের ব্যবহার নেই সেই ক্ষতিকর পণ্য কম ক্ষতিকর বলে বাজারজাত করতে চায় বিদেশি কোম্পানি ও তাদের সহযোগীরা। দেশের যুব সমাজকে বাঁচাতে ই-সিগারেট ও নিকোটিন পাউচ নিষিদ্ধ করে আইন সংশোধন করতে হবে। গত ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ তামাক নিয়ন্ত্রণ সংশোধনের পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হলেও, বিগত এক বছরেও আইনটি পর্যালোচনা শেষ হয়নি। অথচ এই সময়ের মধ্যে তামাকজনিত রোগে মারা গেছে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ এবং পঙ্গুত্ব বরণ করেছে ৪ লাখেরও বেশি।  

আজ শুক্রবার (০৫ ডিসেম্বর ২০২৫) বিকেলে প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংঠনের উদ্যোগে আয়োজিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধনের দাবিতে রিক্সা র‌্যালিতে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। র‌্যালিটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়। প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংঠনের সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদের সভাপতিত্বে র‌্যালিতে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ শাগুফতা সুলতানা, ডাস্ এর টিম লীড আমিনুল ইসলাম বকুল, পরিবেশ কর্মী আবু নাসের অনীক, তামাক নিয়ন্ত্রণকর্মী আবু রায়হান এবং বিভুতি ভূষণ। অবস্থান কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রায় শতাধিক রিকশাচালক। 

র‌্যালিতে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি তামাকের ব্যবহার হ্রাসে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি পুনরায় সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু সিগারেট কোম্পানিগুলো আইনটি সংশোধন করা হলে রাজস্ব হ্রাস হবে, বহুলোক কর্মসংস্থান হারাবে বলে মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে। অথচ আইন পাশ ও সংশোধনের পর গত ২০ বছরে সিগারেট খাতে রাজস্ব আয় বেড়েছে ১৪ গুণ। এ আইনের ফলে ব্যাপকভাবে পরোক্ষ ধূমপানে কমে গেছে। যাতে উপকৃত হয়েছে নারী ও শিশু। শুধু তাই নয় সিগারেট কোম্পানিগুলো আইনের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে দেশে নিকোটিন পাউচ অনুমোদনের চেষ্টা করছে, যা দেশের তরুণ সমাজকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা। ফলে কোম্পানির প্রোপাগান্ডায় বিভ্রান্ত না হয়ে, মানুষের জীবন বাঁচাতে দ্রুত আইন সংশোধন করতে হবে।

তারা আরও বলেন, যুব সমাজকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে সম্প্রতি রোগ সৃষ্টিকারী ‘নিকোটিন পাউচ’ কারখানার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ বেজা। তাদের এ সিদ্ধান্ত কেবল হাইকোর্টের নির্দেশনার পরিপন্থীই নয় বরং সরকারের জনস্বাস্থ্য রক্ষা নীতিরও সম্পূর্ণ বিপরীত। ‘নিকোটিন পাউচ’ তামাক কোম্পানিগুলোর নতুন নেশার ফাঁদ। এটি মুখে রেখে ব্যবহার করায় দ্রুত নেশা তৈরি করে এবং তরুণদেরকে সহজেই আকৃষ্ট করে। অত্যন্ত আসক্তিকর ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্কতার পর ইতোমধ্যে নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, রাশিয়া, ফ্রান্সসহ ৩৪টি দেশ এই পণ্য নিষিদ্ধ করেছে। ফলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের জন্য ফিলিপ মরিসকে দেয়া অনুমোদন বাতিল করতে হবে।

আইনের সংশোধনী নিয়ে তারা বলেন, আইনের খসড়ায় স্থানীয় সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন গাইডলাইনে স্কুল, হাসপাতাল, খেলাধুলার স্থানের কাছে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অনেক স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই তা বাস্তবায়ন করেছে। তামাক ব্যবহারকারীদের সচেতন করার লক্ষ্যে প্যাকেটের গায়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সর্তকবানী ৫০% থেকে বাড়িয়ে ৯০% করার প্রস্তাব করা হয়েছে। খুচরা শলাকায় অতিরিক্ত দামে সিগারেট বিক্রয় করায় প্রতিবছর সরকার প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। এক্ষেত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়ায় একক শলাকার সিগারেট বিক্রয় বন্ধে প্যাকেট ছাড়া বিক্রয় বন্ধ করা প্রস্তাব করা হয়েছে। একইসঙ্গে তরুণ সমাজে ই-সিগারেটে আসক্তি মহামারী হিসেবে বেড়ে যাবার আশঙ্কায় ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সরকার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ই- সিগারেট আমদানি নিষিদ্ধ করেছে।

বক্তারা আইন শক্তিশালীকরণের মাধ্যমেই বহুজাতিক তামাক কোম্পানির অপকৌশল প্রতিহত করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও অসংক্রামক রোগজনিত মৃত্যু কমিয়ে এনে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব বলে মতামত তুলে ধরেন। রিক্সা র‌্যালি থেকে তারা আগামী প্রজন্মকে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা এবং তামাকজনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবিলায় করার জন্য আইনের খসড়ায় উল্লিখিত প্রস্তাবগুলো দ্রুত সংযুক্ত ও সংশোধন জরুরি বলে জানান।

রিক্সা র‌্যালিতে তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত বিভিন্ন সংগঠনের প্রায় শতাধিক প্রতিনিধি ও সাধরণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন...

আরও পড়ুন...

ফেসবুকে আমরা…