সময়ের পটপরিবর্তনের সাথে সাথে গোটা পৃথিবীর মানব জাতির সর্বত্র পরিবর্তন অস্বাভাবিক ভাবে লক্ষনীয় । “মানুষ মানুষের জন্য” এইআপ্ত বাক্যটি আজ সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে উপেক্ষিত, মানবতা আজ শুধুই কথার কথা । উন্নত , উন্নয়নশীল ও তৃতীয় বিশ্বের সকল ভাষাভাষি মানুষ আজ আর আগের মত নেই । এক কথায় “মানবতা আজ জলে ভাসে”। গোটা বিশ্বশিক্ষা, স্বাস্থ্য আজ আর মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে নেই । সর্বখানে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সেবা আজ পন্যে পরিনত হয়ে গেছে । গোটা সমাজ আজ এমন পর্যায় চলে গেছে যার টাকা আছে স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া তারই শুধু অধিকারে পরিনত হয়েছে । অথচবিশ্বব্যাপী বটেই উদীয়মান তৃতীয় বিশ্বে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর৮০/৮৫ শতাংশ মানুষ মৌলিক স্বাস্থ্য সেবা থেকে সরাসরি বঞ্চিত সেটা হউক সরকারী বা প্রাইভেট চিকিৎসা কেন্দ্র । মানচিত্রের তুলনায় এ দেশে জনসংখ্যার গতি জ্যামিতিক হিসাবকেও হার মানিয়ে দ্রুত গতিতে বাড়ছে দিনের পর দিন । গরীব দেশ তদুপরি ঘুষখোর, দূর্নীতিবাজ কর্তা কর্মচারী আর বরাদ্দ স্বল্পতায় বাংলাদেশে যে সকল সরকারী হাসপাতাল (ছোট-বড়) বর্তমান সরকারের শত আন্তরিক ইচ্ছা থাকলেও সাধারন জনগোষ্ঠিকে নূন্যতম স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার ধারে কাছেও পৌছাতে পারেনি স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরও । বলতে গেলে সময়ের প্রয়োজনে ৮০’র দশকের শেষার্ধে এ দেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তিগত পর্যায় বিনিয়োগ আরম্ভ করে । ধীরে ধীরে গত প্রায় দুই যুগে এখন দেশে স্বাস্থ্য সেবা খুব একটা পশ্চিমা ধাচেঁর নাহলেও এশিয়ার উন্নত দেশের সাথে কিছুটা হলেও পাল্লা দিয়ে এই সেবা খাত অনেকদূর পথ এগিয়ে গেছে নি:সন্দেহে। কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে যে স্বাস্থ্য সেবা ধরণ মান যথেষ্ঠ এগোলেও বিরাট জনগোষ্ঠি রয়ে গেছে এই সেবা থেকে একেবারে বঞ্চিত । সরাসরি যদি বলি বাংলাদেশে এ্যাপোলো, স্কয়ার, ল্যাবএইড, বিআরবি, পপুলার এবং বিএসএইচ হাসপাতালে এদেশের কয়জন লোক স্বাস্থ্য সেবা নেয়ার মত আর্থিক সামর্থ আছে তা জানতে পরিসংখ্যানের শরনাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না, খালি চোখেই তা অনুমেয় । যেখানে স্বাস্থ্য খাতের এই দূর অবস্থা যেখানে তৃণমূল পর্যায় অতি সাধারন মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে একরকম বঞ্চিত এবং এই বঞ্চিতের সংখ্যাটা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে, ঠিক সেই মূহুর্তে বিশাল জনগোষ্ঠি সামান্যতম একটা অংশ হলেও উপকৃত হবে স্বল্পমূল্যে স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে চারিদিকে যার বৈষম্য আর হাহাকার অব্যাহত তাসবটা লাঘব করা যেহেতু কারো পক্ষেই সম্ভব নয় নূন্যতম কিছু লোককে হলেও স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্ন নিয়ে ফার্মেগেটের বিজয় স্মরনীতে গড়ে তুলেছেন “সিএসবিএফ – হেলথ সেন্টার” নামক একটি “ডায়াগনোস্টিক সেন্টার”। কোন এক মহিয়সী ব্যক্তিগত উদ্যোগে সম্পূর্ন মানবতার টানে সাধারন মানুষের কল্যাণেস্বেচ্ছায় বিসর্জন দিয়েছেন নিজের সুখ, বিসর্জন দিয়েছেন ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায় থেকেও সকল প্রকার প্রটোকল, ত্যাগ করেছেন বিলাস বৈভবের জীবন যাপন । ক্ষয়ে যাওয়া নষ্ট সমাজ ধংসের শেষ প্রান্তে পৌছাচ্ছে, সেখানে এখনো কিছু মানুষ মানব কল্যাণে নিজের সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, ভোগ ত্যাগে নজির স্থাপন করতে পারেন তার একটা জ্বলন্ত উদাহরনডাঃ ফাতেমা-তুজ-জোহরা । সাধারন মানুষের কিছুটা হলেও পাশে থাকার দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে ২০১৮ সালের কোন এক সকালে তাঁর স্বামীর নিকট উত্থাপিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের অনুমতি পাওয়া মাত্রই আর পেছনে তাকাতে হয়নি । মূলত: সেই ২০১৮ সালের জুন মাসেই জন্ম গরীব দু:খী মানুষের খুব কাছের দু:সময়ের বন্ধু “সিএসবিএফ – হেলথ সেন্টার”। “ডাঃ ফাতেমা-তুজ-জোহরা”তার কথা রেখেছেন, উনি তার পরিচিত বিশ্বস্ত বিভিন্ন পেশায় জড়িত বেশ বড় মনের কয়েকজনকে সঙ্গীকরে প্রথমে “কিউর এন্ড স্মাইল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন” নামে একটি সংগঠনের নিবন্ধন নিলেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ।ইতোমধ্যে যারা “ডাঃ ফাতেমা-তুজ-জোহরাকে” ব্যক্তিগত ভাবে জানতেন, চিনতেন তারা হাত বাড়িয়ে দিলেন “সিএসবিএফ – হেলথ সেন্টার” –কে তার লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য । সমাজের সাথে সামঞ্জস্য রেখে চিকিৎসা জগতে পশ্চিমা বিশ্বে ব্যবহৃত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সকল প্রকার যন্ত্রপাতি আমদানী করা হয়েছে, স্থাপন করা হয়েছেযথাসময়ে । সবগুলো মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট ২০১৯ আগস্ট শেষার্ধে সেপ্টেম্বর এর প্রথম দিকে তৃনমূল নি:স্ব মানুষের স্বাস্থ্য সেবার অঙ্গীকার নিয়ে পথচলা“সিএসবিএফ – হেলথ সেন্টারের”।সাধারন মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত কল্পে সরকার এর নেয়া মেগা প্রকল্প অত্যন্ত সহজলভ্য এবং অতি নিম্ন আয়ের মানুষ যাতে স্বাস্থ্য সেবা পায় । অথচ সরকারের নেয়া পদক্ষেপকাজে আসছে কিছু সংখ্যক বুদ্ধিমান অর্থ পিপাসু কর্মকর্তা ও চক্রের ব্যক্তিগত অর্থ উপার্জনের কাজে । চারিদিকে যখন এই অবস্থা ঠিক ঐ সময় “ডাঃ ফাতেমা-তুজ-জোহরা” শক্ত হাতে মানব সেবায় স্থাপন করা “সিএসবিএফ – হেলথ সেন্টার” সাধ্যমত স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে আপামর জনসাধারনকে । এখানে পৃথিবীর বিখ্যাত MRI পরীক্ষা নিতে গেলে বাংলাদেশের যে কোন হাসপাতালে রোগী থেকে নেয়া হয় নিম্নে ৭,৫০০/- (সাত হাজার পাঁচশত) টাকা, রোগ ভেদে ৭,৫০০/- থেকে ৯,০০০/- টাকা । অথচ একই রোগীর একই রোগের ক্ষেত্রে একটি MRI পরীক্ষা করতে নেয়া হচ্ছে ৪,৫০০/- (চার হাজার পাঁচশত) টাকা মাত্র । বাংলাদেশে যে কয়টি প্রাইভেট ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিকসেন্টার বর্তমান তন্মধ্যে “সিএসবিএফ – হেলথ সেন্টার” একমাত্র যা স্বাস্থ্য সেবা খাতের অন্যতম প্রতিষ্ঠান। একেবারে নূন্যতম মূল্যে যে কোন পরীক্ষানিরীক্ষা করছে । আর এটা সম্ভব হয়েছে একজনের ব্যক্তিগত ইচ্ছায়, তিনি হলেন “ডাঃ ফাতেমা-তুজ-জোহরা” একটি ট্রাষ্টি বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত সিএসবিএফ – হেলথ সেন্টারের পথচলা খুব একটা বেশীদিন নয় অথচ সরকার কর্তৃক সংশ্লিষ্ট বিভাগ স্বাস্থ্য খাতের ভালো-মন্দ খবর রাখেন, নিয়ন্ত্রন করেন এমন সব প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিদ্বয় এবং সাধারন জনগনের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে খুব অল্প সময়েই । কিউর এন্ড স্মাইল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত “সিএসবিএফ – হেলথ সেন্টার” পরিচালনা পর্ষদ এর প্রতিটি সম্মানিত সদস্য ও সদস্যার মন-মানসিকতা, মানবতা, দর্শন, সামাজিকদায়বদ্ধতা সহ তৃণমূলঅসহায় মানুষের প্রতি দরদ । স্বপ্ন সময়ে সিএসবিএফ – হেলথ সেন্টার কে জনগনের অতি নিকটে যেতে দূর্গম পথ অনেকটা সহজ করে দিয়েছে । আরো সহজ ভাবে বলতে গেলে নির্দিধায় বলতে হয় স্বল্প সময়ে সিএসবিএফ দূর্গম বন্ধুর পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে । এ দেশে যিনি বা যাঁরা বিভিন্ন সমসাময়িক বাসামাজিক উন্নয়নে বা দেশের সামাজিক জনগোষ্টির প্রয়োজনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মিডিয়াতে (প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক) লেখা-লেখি বলা-বলি করেন দেশের যে কোন বিশেষ প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ জাতীয় কল্যানে ইতোপূর্বে যথেষ্ট অবদান রেখেছে এর প্রমান ভূড়িভূড়ি । মুশকিলটা হচ্ছে অন্য জায়গায় । আমাদের দেশের জ্ঞানীগুনি বুদ্ধিজীবিরা বেশীর ভাগ সময় তাদের জ্ঞানলব্ধ লেখা-লেখি বা বলা-বলি বাণিজ্যিক ভাবে বলে কয়ে থাকেন । অতীতে দেখা গেছে রেডিও, টেলিভিশন, পত্র পত্রিকায় যে সব পরামর্শ, কথা, দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন তার বেশির ভাগই কোন কোন পক্ষের হয়েই হয়ে থাকে । আজ যে “সিএসবিএফ – হেলথ সেন্টার” নিয়ে আমার এই লেখাটুকু লিখেছি, কিউর এন্ড স্মাইল হেলথ সেন্টার সম্পর্কে ইতিপূর্বে আমার কোন অভিজ্ঞতা ছিলনা বা আমি এই প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত নই । আমার ব্যক্তিগত চরিত্রে একটা নেশা অহরহ কাজ করে, তাহচ্ছে যে কোন জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্রই হউক না কেন যদি দেখি তাঁর বা তাদের দ্বারা সমাজের কোন উপকার হচ্ছে আমি মনের অজান্তেই তাঁকে বা তাদেরকে স্যলুট করি অহরহ । আমি গর্ববোধ করি আমার এই গরিব দেশে যেখানে সাধারণ মানুষের নামে সরকারী বাজেটের সিংহ ভাগ নানা ভাবে ব্যক্তি বা গোষ্ঠির পকেটে চলে যাচ্ছে, যেখানে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি চলছে অবিরত অনেক চেষ্টা করেও দূর্নীতির রাহুগ্রাস থেকে রেহাই পাচ্ছে না গোটা জাতিসেখানে কয়েকজন লোকের মানবতা সেবার এই চেষ্টা টুকুর জন্য তাদের ধন্যবাদ দেয়া বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা কোন ভাবেই দালালী পর্যায়ে পরেনা ।দীর্ঘজীবীহোক“সিএসবিএফ – হেলথ সেন্টার” ।