মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহীর তানোর ও
নিয়ামতপুর উপজেলায় পৃথক দুটি ঘটনায় রাতের আঁধারে
পরিকল্পিতভাবে উন্নত জাতের আমগাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
এতে দুই উপজেলার কৃষকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি
হয়েছে।
সর্বশেষ ঘটনা ঘটেছে নিয়ামতপুর উপজেলায়। শুক্রবার (১৯
ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নেহেন্দা
এলাকায় একটি আমবাগানে প্রায় ৬ শতাধিক আম ও মেহেগুনি
গাছ কেটে ফেলা হয়। এতে বাগানটির মালিক কৃষক বজলুর রহমান
নঈম এক রাতেই সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েন।
এর কয়েক দিন আগে, বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজশাহীর তানোর
উপজেলার সীমান্তবর্তী পবার নওহাটা পৌরসভার কাজীপাড়া
বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের একটি আমবাগানে
দুর্বৃত্তরা ১১৭টি উন্নত জাতের আমগাছ কেটে ফেলে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিয়ামতপুরের বাগানে সারি সারি
আমগাছ গোড়া থেকে কাটা অবস্থায় পড়ে আছে। চারদিকে
ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ডালপালা ও পাতার স্তূপ। অনেক গাছে
নতুন মুকুলের কুঁড়ি থাকলেও রাতের আঁধারে সেই সম্ভাবনাকে
নির্মমভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বজলুর রহমান নঈম জানান, দুই বছর আগে
তিনি নেহেন্দা মৌজায় প্রায় ২০০ শতক জমিতে ৬ শতাধিক
উন্নত জাতের আম ও মেহেগুনি গাছ রোপণ করেন। বাগানে
বারোমাসি, কাটিমন, আম্রপালি, হাঁড়িভাঙ্গা, গৌড়মতি ও
বারি-৪ জাতের আমগাছ ছিল। শুরু থেকেই নিয়মিত সেচ, সার
প্রয়োগ ও রোগবালাই দমনে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে
আসছিলেন তিনি। ইতোমধ্যে অনেক গাছে মুকুল আসায় চলতি
মৌসুমে ফল বিক্রি করে পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নতির
স্বপ্ন দেখছিলেন। তার দাবি, গাছের পরিচর্যা ও অন্যান্য খরচ
মিলিয়ে তার প্রায় ৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ
শুধু আর্থিক নয়; দুই বছরের শ্রম, ভবিষ্যৎ আয়ের সম্ভাবনা ও
পরিবারের জীবিকার নিশ্চয়তাও একসঙ্গে ভেঙে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকাটি তুলনামূলক নিরিবিলি
হওয়ায় গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা সহজেই এ ধরনের নাশকতা চালাতে
পেরেছে। খবর পেয়ে আশপাশের কৃষক ও এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে
ছুটে আসেন। তারা বলেন, গাছের সঙ্গে শত্রুতা থাকা উচিত নয়।
দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত
করার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে নিয়ামতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল
ইসলাম বলেন, এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া
যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত
ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।