মনোহরগন্জ , কুমিল্লা প্রতিনিধি :
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে পরকীয়ার জেরে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এলাকাবাসীর ধাওয়ায় প্রাণ বাঁচাতে পুকুরে লাফ দিয়ে ডুবে মারা যান তিনি। ঘটনাটি ঘটে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার লক্ষ্মণপুর ইউনিয়নে।
নিহত যুবকের নাম সেলিম মিয়া। তিনি গাইবান্ধা জেলার সদর থানার খাসরা চাঁন্দের ভিটা গ্রামের মাহতাবের ছেলে। পেশায় রাজমিস্ত্রি সেলিম মনোহরগঞ্জ উপজেলার সরসপুর ইউনিয়নের ভাউপুর গ্রামে বিয়ে করে সেখানেই কাজের সুবাদে বসবাস করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে সেলিম মিয়া লক্ষ্মণপুর এলাকায় এক প্রবাসীর স্ত্রী শিল্পী আক্তারের সঙ্গে দেখা করতে যান। এ সময় এলাকাবাসী বিষয়টি টের পেয়ে তাকে ধাওয়া করে এবং একপর্যায়ে গণপিটুনি দেয়। পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে দৌড়ে পাশের চৌধুরীবাড়ির পুকুরে লাফ দেন তিনি। এরপর আর তিনি পুকুর থেকে উঠতে পারেননি।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লক্ষ্মণপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মণপুর গ্রামের চৌধুরীবাড়ির পুকুর থেকে সেলিম মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
ফায়ার সার্ভিসের লিডার বিপ্লব বড়ুয়া জানান, রাতেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও পুকুরে অতিরিক্ত কচুরিপানা থাকায় উদ্ধার অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি। ১৬ ডিসেম্বরের কুচকাওয়াজ শেষে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আবার তল্লাশি শুরু করা হয়। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় কচুরিপানা পরিষ্কার করে পুকুরের মাঝামাঝি অংশ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত সেলিমের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, “প্রবাসী রুবেলের স্ত্রী শিল্পী আক্তার আমার স্বামীকে ডেকে এনে মেরে ফেলেছে।”
মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম বলেন, “ঘটনাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চোর সন্দেহে তাকে ধাওয়া করা হয়েছিল। তদন্তের স্বার্থে প্রবাসীর স্ত্রী শিল্পীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
এই মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তে তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।