কুবিতে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ ও বাংলাদেশের বাস্তবতা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত  

নিউজ ডেস্ক | 71shadhinota.com
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
কুবিতে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ ও বাংলাদেশের বাস্তবতা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত  

পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যাসোসিয়েশন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় -এর উদ্যোগে এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগিতায় ‘বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ  বাংলাদেশের বাস্তবতা’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।  মঙ্গলবার (০৩ ডিসেম্বরসামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের কনফারেন্স কক্ষে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ হায়দার আলীবিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থত ছিলেন মাননীয় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ সোলায়মান।  বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা  দায়রা জজ মাসদার হোসাইনবাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুর রহমান জীবল এবং মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।  সেমিনারটির সভাপতিত্ব করেন মাননীয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল।  এছাড়া লোকপ্রশাসন এবং আইন বিভাগের শিক্ষকগণও উক্ত সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথকীকরণ এবং পৃথকীকরণ পরবর্তীতে বাংলাদেশের ওপর কী প্রভাব পড়বে বিষয় নিয়ে সেমিনারটি আয়োজন করা হয়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, 'বাংলাদেশের চালিকাশক্তির তিনটা স্তম্ভ হলো-আইন বিভাগবিচার বিভাগ এবং নির্বাহী বিভাগ।   তিনটা বিভাগের মধ্যে একধরনের প্রতিযোগিতা হওয়া দরকার ছিল, কোন বিভাগ কত ভালো করবে। স্বাধীনভাবে দেশ পরিচালনা করতে হলে বিচার বিভাগকে স্বাধীন হতে হবে। যারা নির্বাহী বিভাগে কাজ করেন তাদেরও স্বাধীন হতে হবে। অন্যথায় আবার সেই ফ্যাসিজম আরও ভয়ানকভাবে ফিরে আসবে।'

অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা  দায়রা জজ মাসদার হোসেন বলেন, 'কীভাবে রাষ্ট্র কাঠামো হবে এর ওপর অনেকে তাদের বিজ্ঞ মতামত দিয়েছেন। আপনি একটা রাষ্ট্রের সংবিধান করবেনআইন করবেন কিন্তু সেটা জনবান্ধব অথবা সেটা জনগণের জন্য কল্যাণকর কি-নাসংবিধান সেটা দেখার দায়িত্ব দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট কে। কোনো আইন যদি জনকল্যাণকর না হয় তাহলে সুপ্রিমকোর্ট সেই আইন ডিক্লাইন করে দেয়।

তিনি আরও বলেন, '১৭৩১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ১৮৬ বছরে ১৮২ বার বিচার বিভাগকে আলাদা করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে। কারণ রাজা যে শাসন চালাবে, কেউ যদি তাকে হস্তক্ষেপ করে তাহলে সে তো এটা স্বাভাবিকভাবে নিবে না। ২০০৭ সালে আমার মামলায় (মাসদার হোসেন মামলায়বিচার বিভাগকে কাগজ-কলমে আংশিক স্বাধীন করা হলেও আসলে এটি স্বাধীন হয়নি। তবে এখন সংস্কার কমিটির কাজ চলমান আছে।'

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ হায়দার আলী বলেন, 'আমরা আশা করি বাংলাদেশ একটি উন্নত বিচার ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাবে। যেখানে মানুষ মনে করবে এটা তার শেষ আশ্রয়স্থল। সেখানে গিয়ে সে ন্যায় বিচার পাবেসে যেই রাজনৈতিক দলের হোকযে ধর্মের হোকদুর্বল কিংবা শক্তিশালি হোক।'

সেমিনারটির সভাপতি মাননীয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাসুদা কামাল বলেন, 'রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ণের কারণে প্রশাসক  বিচারকদের স্বাধীনতা আমাদের দেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। মাসদার হোসেন মামলা ২০০৭ সালে ফয়সালা হয়েছে। উনি একজন জীবন্ত কিংবদন্তিনিজেই একজন প্রতিষ্ঠান। দেশে-বিদেশে মাসদার হোসেন মামলা এখন পঠিত বিষয়। তিনি একজন বিচারক এবং আইন সংস্কার কমিশনেরও একজন সদস্য।'