পর্ণগ্রাফি মামলায় জামিনে এসে বাদীকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় জিডি 

নিউজ ডেস্ক | 71shadhinota.com
আপডেট : ২৩ জুন, ২০২৪
পর্ণগ্রাফি মামলায় জামিনে এসে বাদীকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় জিডি 

আব্দুল বাসেদঃ, নোয়াখালীঃ

 

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ (আইসিটি) আইনে মামলার আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে এসে ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকী দেওয়ার অভিযোগে নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে মামলার বাদী মামুন অর রশিদ। এ ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযুক্ত অপরাপর ৪জন আসামির ব্যবহারিত মোবাইল ফোন গুলো জব্দ করেছেন।  

 

শনিবার (২২ জুন) সকালে আইসিটি আইনে দায়ের করা ওই মামলার বাদি হাতিয়ার ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মামুন অর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

 

মামলার বাদী মামুন অর রশিদ বলেন, আসামিরা জামিনে এসে আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে লাশ গুমের হুমকি দিচ্ছেন। এ বিষয়ে সুধারাম মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর ১৮৩৬) রুজু করা হয়েছে। আসামিদের হুমকি ধমকির আমি ও আমার পরিবার ভয়ভীতির মধ্যে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।  

 

আসামিরা হলেন, হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন (৫২), মধ্য রেহানিয়া আবদুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন তানবীর (৩৫), ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জিন্নাত আরা বেগম (৩৫) ও হাসান উদ্দিন বিপ্লব (সাময়িক বরখাস্ত) এবং হাতিয়া উপজেলা এলজিইডি'র (স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর) উপসহকারী প্রকৌশলী শরীফুল ইসলাম।

 

এর আগে, এ আসামিরাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গত ৫ মে নোয়াখালীর সুধারাম (সদর) থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ (আইসিটি) আইনে মামলা দায়ের করেন হাতিয়ার ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মামুন অর রশিদ। এ মামলার প্রধান আসামি সদর উপজেলার ফিরোজ শাহ্ মাইজভান্ডার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদুর রহমান ওরুফে আমজাদ হোসেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তিনি ১ মাস ২০ দিন জেল খেটে গত সাপ্তাহে উচ্চ আদালত থেকে অন্তভর্তিকালীন জামিন নিয়েছেন।

 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে বাদী মামুন অর রশিদের স্ত্রী নলুয়া রেহান আলী চৌধুরী হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকার মোবাইল থেকে ব্যক্তিগত আপত্তিকর ছবি হ্যাক করে ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবিসহ অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব করেন।

 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুধারাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মুকিব হাসান বলেন, এ মামলার প্রধান আসামি মো. আমজাদুর রহমান ওরুফে আমজাদ হোসেনকে গ্রেফতার কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। তিনি গত ১ মাস ২০ দিন জেল খেটে গত সাপ্তাহে উচ্চ আদালত থেকে অন্তভর্তিকালীন জামিন নিয়েছেন। বাকি আসামিরাও উচ্চ আদালতের জামিনে রয়েছেন। তাদের ৫জনের মধ্যে ৪জনের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত চলমান রয়েছে।

 

এদিকে মোবাইল বন্ধ থাকায় মামলার বাদিকে হত্যা ও লাশ গুম করার হুমকির বিষয়ে আসামিদের কারোরই বক্তব্য নেয়া যায়নি। অপরদিকে উপসহকারী প্রকৌশলী শরীফুল ইসলামের ফোন সচল থাকলেও তাকে বারংবার ফোন দেয়ার পরও তিনি রিসিভ করেননি।

 

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি জিডির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি আমজাদুর রহমান ওরুফে আমজাদ হোসেনকে গ্রেফতার কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে অপরাপর আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।