মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালেদ হাসান বিপ্লবের
বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও ককটেল হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার দিবাগত রাতে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে নগরীর মতিহার থানার
কাজলা নতুন বৌ বাজার এলাকার ওই বাড়িতে তাণ্ডব চালানো হয়।
এ সময় বিপ্লবের বাবা হেলাল উদ্দিনকে (৬২) একটি কক্ষে আটকে
রেখে এবং তার মা খালেদা বেগমকে (৫৩) হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে
আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার।
পরিবারের সদস্যরা জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার
মধ্যে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ জনের একটি দল বিপ্লবের বাড়িতে
হামলা চালায়। মূল ফটক তালাবদ্ধ থাকায় তারা প্রথমে ভেতরে ঢুকতে
পারেনি। পরে ৩০-৪০ জন প্রাচীর টপকে ভেতরে প্রবেশ করে এবং
ভবনের সিঁড়ির গেটের তালা ভেঙে দোতলায় ওঠে। হামলাকারীরা
খালেদ হাসান বিপ্লবকে খুঁজতে থাকে।
বিপ্লবকে না পেয়ে তারা বাড়ির আসবাবপত্র, টেলিভিশন, ফ্রিজ,
এসি এবং অন্যান্য জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। বাধা দিতে গেলে
দুর্বৃত্তরা বিপ্লবের মা খালেদা বেগমকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত
করে। এক পর্যায়ে তারা বাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করলে খালেদা
বেগমের আকুতিতে হামলাকারীরা ফিরে যায়। তবে যাওয়ার আগে
তারা নিচতলায় থাকা তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়
এবং বাড়ি লক্ষ্য করে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
উল্লেখ্য, খালেদ হাসান বিপ্লব গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে বাড়িতে
থাকছেন না।
ঘটনার পর পরিবার ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশের একটি টহল দল
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তারা আহত খালেদা বেগমকে হাসপাতালে
ভর্তির পরামর্শ দিলেও আতঙ্কের কারণে বাড়ি থেকে বের হতে
পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)
আব্দুল মালেক জানান, তিনি রাতে থানায় ছিলেন না এবং
ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত নন। তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে তার
কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।
মতিহার থানার বড় মসজিদপাড়া কাজলা এলাকার রাবি সাবেক
ছাত্রলীগ নেতা ও পরবর্তীতে মহানগর যুবলীগ নেতা বিপ্লব ও
যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মিঠুর বিরুদ্ধে ব্যপক অভিযোগ
তুলেছেন এলাকাবাসী। বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে এলাকায়
অধিপত্য বিস্তার, জমিদখল, চাঁদাবাজি, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে
জামায়াত, বিএনপি’র নেতা-কর্মী ও সাধারণ এলাকাবাসীর উপর
প্রকাশ্যে পিস্তল হাতে হামলা, নির্যাতন ছিল নিত্যদিনের ঘটনা।
তারা তাদের প্রতিবেশী কুরবান নামের এক প্রতিবেশীর বাড়িতে
ঢুকে তার ছেলেকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে বিপ্লব ও মিঠু বাহিনী। ওই
ঘটনায় বিপ্লবের মা-বাবা প্রকাশ্যে নেতৃত্ব দেয় বলেও অভিযোগ
রয়েছে। তবে তাদের অব্যাহত হুমকিতে ভুক্তভোগীর মামলা দেয়া থেকে
বিরত ছিলেন।