জলঢাকায় প্রতি কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩০ টাকা

নিউজ ডেস্ক | 71shadhinota.com
আপডেট : ০৭ নভেম্বর, ২০২৫
জলঢাকায় প্রতি কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩০ টাকা

হাসানুজ্জামান সিদ্দিকী হাসান জলঢাকা নীলফামারী প্রতিনিধি

নীলফামারীর জলঢাকায ৫ দিনের ব্যাবধানে পেঁয়াজের প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৩০ টাকা।

বৃহস্পতিবার উপজেলার খুচরা ও পাইকারী  বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা ও জানাযায়, জলঢাকায় মাত্র পাঁচ দিনের মাঝে খুচরা বাজারে  ৭০ টাকা কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম ৩০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর পাইকারী বাজারে ৯৫ থেকে ৯৭ টাকা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাজার ও পাড়ার দোকান গুলোতে এ দাম আরও বেশি। ব্যবসায়িরা দাবি করেন বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

 এদিকে অক্টোবর মাসে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে এ বছর পেঁয়াজ রোপণে কিছুটা বিলম্ব হচ্চে। ফলে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে সময় লাগতে পারে। বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত না করা গেলে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।  

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা মনে করছেন, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে বাজারে পেঁয়াজের  দাম বাড়ানো হচ্ছে। 

পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় এখন পুরোপুরি স্থানীয় উৎপাদনের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। মৌসুমের শেষদিকে মজুত কমে যাওয়ায় দাম বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।তারা আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাচায় পেঁয়াজ  সংরক্ষিত থাকার কারণে পেঁয়াজ শুকিয়ে ওজন কমে যায়। ফলে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা মুনাফা রক্ষায় পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দাম কিছুটা বাড়িয়ে বিক্রি করছেন, যা সামগ্রিকভাবে বাজার মূল্য বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলছে।

জলঢাকা কাঁচা  বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা শাহীন জানান,পাইকারীতে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে কেজিপ্রতি ৯০ থেকে ৯৭ টাকায়। সরবরাহ কমে যাওয়ায় দামের ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অন্যদিকে, কৈমারী ইউনিয়নের গাবরোল টগড়ার ডাঙা বাজারের পেঁয়াজ ক্রেতা কৃষক  আব্দুল কাদেরের মতে, বাজারে পরিকল্পিত ভাবে দাম বাড়ানো হচ্ছে। তার ভাষায়, “সরবরাহ কমলে সাধারণত কয়েক টাকার পার্থক্য হয়, কিন্তু মাত্র পাঁচ দিনে কেজিপ্রতি ৩০ টাকা বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক।”

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক  সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে দায়ী করে বলেন, আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আমদানির জন্য  আবেদন করলেও সরকার আইপি (আমদানির অনুমতি) দিচ্ছে না, ফলে বাজারে দাম দ্রুত বাড়ছে। তার দাবি, যদি সরকার অনুমতি দেয়, তবে তিন-চার দিনের মধ্যেই দাম ৫০ টাকার মধ্যে নেমে আসবে।

পেঁয়াজ ক্রেতা উপজেলার টেংগনমারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুজ্জামান বলেন, দেশে পর্যাপ্ত উৎপাদন থাকা সত্ত্বেও ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তিনি আরো বলেন,এ ধরনের কারসাজি রোধে সরকারকে দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে, না হলে পেঁয়াজ সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।

পেঁয়াজ ক্রেতা উপজেলা থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক আবেদ আলী  বলেন, “বর্তমান দামের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মূলত কারসাজি চক্রের ফল।এতে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পেঁয়াজের বাজারে প্রভাব বিস্তার করছে।”

বাজার সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক  শাহজাহান কবির লেলিন বলেন, “যারা আগে পেঁয়াজের বাজারে প্রভাব বিস্তার করত, তারাই আবার সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে।