মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীর পবা থানায় বিউটি বেগম হত্যা মামলায় তিনজনের মধ্যে একজন আসামি মো. তারা মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন: মো: তারা মিয়া (৩৩): পবা থানার বাগসারা গ্রামের মো: আব্দুল বারেকের ছেলে। মো: ফারুক হোসেন (৩০): পবা থানার মহানন্দাখালী মো: ইছুল মণ্ডলের ছেলে।
মো: হেলাল উদ্দিন (২৩): পবা থানার মহানন্দাখালী এলাকার মৃত এন্তাজ আলীর ছেলে।
পবা থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের দ্রুত তৎপরতায় মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শারিফুর রায়হান তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের শনাক্ত করেন।
গ্রেপ্তার অভিযান:
(১৯ অক্টোবর) রাত সোয়া ১২টায় নগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন সোনাদিঘীর মোড় এলাকা থেকে প্রথমে আসামি তারা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীতে পবা থানার মহানন্দাখালী এলাকা থেকে ফারুক হোসেন এবং পিল্লাপাড়া এলাকা থেকে হেলাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে তারা মিয়া বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন এবং জানান যে অন্য দুই আসামিও এতে জড়িত ছিল।
তারা মিয়া জবানবন্দিতে জানান , নিহত বিউটি বেগম টাকার বিনিময়ে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন। ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে অসামাজিক কাজের জন্য বিউটি বেগমের সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু আসামিরা টাকা পরিশোধ না করে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে এবং মরদেহ ধানের জমিতে ফেলে রেখে যায়। তদন্তকারী কর্মকর্তা অপর দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করবেন।
নিহতের ছেলে মো. মিলন প্রাং (২৫) পবা থানায় দায়ের করা এজাহারে জানান , তার মা বিউটি বেগম প্রায় ১৫ বছর আগে পারিবারিক কলহের কারণে তার বাবার সঙ্গে আলাদা হয়ে রাজশাহীর আলাইবিদিরপুর গ্রামে ভাড়া থাকতেন এবং একটি স্থানীয় হোটেলে কাজ করতেন। দুই বছর আগে তিনি গাইবান্ধার মো. রাশেদ নামের এক ব্যক্তিকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
১৮ অক্টোবর সকালে নিহতের দ্বিতীয় স্বামী রাশেদ ফোনে মিলনকে জানান , বিউটি বেগমের ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। মিলন মায়ের ভাড়া বাসায় গিয়ে ঘর তালাবদ্ধ দেখতে পান এবং স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারেন, ঘরটি কয়েকদিন ধরে বন্ধ। পরে তিনি খবর পান পবা থানার বাগসারা এলাকায় অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। নিহতের কোমরে থাকা চাবি দিয়ে তালা খুলে মিলন নিশ্চিত হন মৃতদেহটি তার মায়েরই।