তানোরে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু, ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

নিউজ ডেস্ক | 71shadhinota.com
আপডেট : ০৭ অক্টোবর, ২০২৫
তানোরে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু, ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহীর তানোরে একটি
বেসরকারি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় এক নবজাতকের মৃত্যুর
অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নবজাতকের বাবা তানোর থানায়
একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর
সদরে অবস্থিত ‘দি পদ্মা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে
ঘটনাটি ঘটেছে ।
ভুক্তভোগী পরিবার ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (৪
অক্টোবর) মুন্ডুমালা পৌর এলাকার ভাটার মোড় মহল্লার আব্দুর
রাজ্জাকের স্ত্রী সোহানা বেগমের প্রসব বেদনা শুরু হলে তাকে দি
পদ্মা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে ক্লিনিকের মালিক,
যিনি বাবু নামে পরিচিত, প্রথমেই বিভিন্ন পরীক্ষার কথা বলে
তাদের কাছ থেকে ২,৪০০ টাকা নেন।
পরে শনিবার বিকেলে চিকিৎসক মোস্তাক আহমেদ ফয়সাল
অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সোহানা বেগমের প্রসব করান এবং তিনি
একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। জন্মের পর নবজাতককে পরীক্ষা করে
চিকিৎসক অক্সিজেন দেওয়ার পরামর্শ দেন।
নবজাতকের বাবা আব্দুর রাজ্জাকের অভিযোগ, চিকিৎসক চলে
যাওয়ার পর ক্লিনিক মালিক বাবু নিজেই নবজাতকের পায়ে একটি
ইনজেকশন পুশ করেন। এর পরপরই শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি
হতে থাকে। এক পর্যায়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জোর করে
নবজাতককে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে
যাওয়ার জন্য চাপ দেয়। তবে আব্দুর রাজ্জাক জানান, রাজশাহীতে
নেওয়ার পথেই তার সন্তানের মৃত্যু হয়। তিনি তার সন্তানের মৃত্যুর
জন্য ক্লিনিক মালিক বাবুকে দায়ী করে ক্লিনিকটি বন্ধ করাসহ
তার কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে আব্দুর রাজ্জাককে অভিযোগ তুলে
নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি
দেখানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ‘দি পদ্মা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক
সেন্টারে’র মালিক শাহজামাল বাবু দাবি করেন, অপারেশনের
আগেই রোগীর পরিবারকে জানানো হয়েছিল বাচ্চার অবস্থা ভালো

নয়। বাচ্চার কোনো সমস্যা হলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে
না, এই মর্মে মুচলেকা নেওয়ার পরেই অপারেশন করা হয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী
একটি ১০ শয্যার বেসরকারি ক্লিনিকে সার্বক্ষণিক একজন
এমবিবিএস চিকিৎসক এবং একজন প্রশিক্ষিত নার্স থাকার
কথা। কিন্তু ‘দি পদ্মা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’
এসব নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাজশাহী জেলার সিভিল সার্জন ডা. এস. আই. এম. রাজিউল করিম
জানান, তিনি এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাননি।
তবে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দেন।#
তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন,
অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী
ব্যবস্থা নেওয়া হবে।