বাগেরহাটে দুই কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ, ছাত্রলীগ সভাপতি গ্রেপ্তার

নিউজ ডেস্ক | 71shadhinota.com
আপডেট : ১৬ জানুয়ারী, ২০২৪
বাগেরহাটে দুই কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ, ছাত্রলীগ সভাপতি গ্রেপ্তার

১৬ জানুয়ারি ২০২৪


খুলনা সরকারি সুন্দরবন কলেজের দুই ছাত্রীকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণের ঘটনায় শাকিল সরদার ফেরদৌস (২৫) নামে ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মেহেদী হাসান (২০) নামে অপর ধর্ষক পলাতক রয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার জাড়িয়া-চৌমাথা এলাকার একটি চায়ের দোকোনের বেঞ্চে ও পার্শ্ববর্তী স্কুলের পিছনে এই পালাক্রমে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার এক কলেজছাত্রী (২১) রেববার বিকালে ফকিরহাট থানায় দুই ধর্ষকের নামে মামলা দায়ের করলে সন্ধ্যায় সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিলকে জাড়িয়া গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত ছাত্রলীগ সভাপতি শাকিল ফকিরহাট উপজেলার জাড়িয়া গ্রামের মোস্তাব সরদারের ছেলে। পলাতক অপর ধর্ষক মেহেদী হাসান একই এলাকার শেখ মাসুমুল হকের ছেলে। পুলিশ গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে গতকাল বিকালে বাগেরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামানের আদালতে পাঠালে ধর্ষক শাকিল স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান  শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।  

   
ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফুল আলম জানান, শনিবার বিকালে খুলনা সরকারি সুন্দরবন কলেজ পড়ুয়া দুই বান্ধবীর একজনের চাচাতো ভাই ও বন্ধুর সঙ্গে মোটরসাইকেলে চড়ে বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ও হযরত খানজাহান (রহ.) মাজারে ঘুরতে ঘুরতে যায়। পরে তারা দু’টি মোটরসাইকেলে করে রাত ১২টার পরে মাজার থেকে খুলনার দিকে রওনা দেয়। বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কের ফকিরহাটের জাড়িয়া  চৌমাথা এলাকায় একটি মোটরসাইকেলে ত্রুটি দেখা দেয়। এ সময় ফকিরহাট সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মো. শাকিল সরদার ফেরদৌস ও তার সহযোগী  মেহেদী হাসান দুই কলেজছাত্রীর সঙ্গে থাকা মোটরসাইকেলচালক চাচাতো ভাই ও বন্ধুকে মারপিট করে তাড়িয়ে দেয়।

এরপর ছাত্রলীগ সভাপতি শাকিল ও তার সহযোগী  মেহেদী প্রথমে জাড়িয়া-চৌমাথা এলাকার একটি চায়ের দোকানের বেঞ্চে ও পাশ্ববর্তী স্কুলের পিছনে দুই কলেজছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ ঘটনার কথা কাউকে না বলার জন্য হুমকি-ধমকি দিয়ে দুই ধর্ষক চলে যায়। মারপিট করে তাড়িয়ে দেয়াদের মধ্যে একজন ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহয়তা চায়। ফোন পেয়ে ফকিরহাট থানা পুলিশ ধর্ষণের শিকার দুই কলেজছাত্রীকে রাতেই উদ্ধার করে। এরপর পুলিশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই দুই কলেজছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। নির্যাতনের শিকার (২১) এক কলেজছাত্রী রোববার বিকালে ফকিরহাট থানায় দুই ধর্ষকের নামে মামলা দায়ের করলে সন্ধ্যায় সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি শাকিলকে জাড়িয়া গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে ছাত্রলীগ সভাপতি শাকিল দুই কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় মেহেদী হাসান (২০) নামে অপর ধর্ষককে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। পুলিশ গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে গতকাল বিকালে বাগেরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামানের আদালতে পাঠালে ধর্ষক শাকিল স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান  শেষে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। *এদিকে ফকিরহাট উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জয়ন্ত দাস স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ছাত্রলীগের সংগঠন বিরোধী ও অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগের ফকিরহাট সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি শাকিল সরদার ফেরদৌসকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।*