Page loaded in 12.656072 seconds
সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
জয়পুরহাট থেকে মোঃ জহুরুল ইসলামঃ ২২ ফেব্রুয়ারি/২০২১ইং
জয়পুরহাট জেলার অরক্ষিত ২৬টি রেল ক্রসিং এখন জন-মানুষের মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে, প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল যেন আর থামছেই না।
২০০৬ সালে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুরে আমুট্ট রেল ক্রসিংএ রেল ও বাসের সংঘর্ষে প্রাণ হারায় ৪০ জন ২০০৯ সালে জয়পুরহাট শহরের কাশিয়াবাড়ী রেল-ক্রসিংএ ট্রেন ও বালুবাহী ট্রাকের সংর্ঘষে প্রাণ হারায় ৯ জন। সর্বশেষ ২০০০ সালে ১৯ শে ডিসেম্বর পুরানাযপৈল রেল-ক্রসিংএ ট্রেন ও যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্সে ১৪ জননের প্রনহানী ঘটে। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় মাটিচাপা পড়ে তিন তরুণ প্রকৌশলী স্বপ্ন। ঝরে পড়ে আরো তিন মেধাবী ছাত্র।
জয়পুরহাট জেলা সদরে তেঘর বিশা (কুমারপাড়া) রেল-ক্রসিংএ কোন প্রকার সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকার কারণে মাঝে-মাঝে বালির ট্রাক-মটর বাইক ও মেসির সাথে ট্রেনের ধাক্কা-সহ ঘটছে অনাকাংক্ষিত দূর্ঘটনা। প্রতিনিয়ত ঘটছে এছাড়া জামালগঞ্জ, তিলকপুর, আক্কেলপুর, বড়তাজপুর, তেঘর রেলঘুমটি, সাহাপুর, ডাকবাংলা বাইপাস, পূর্ব মাতাপুর, রাধা বাড়ি উত্তর, বারোঘাটি পুকুর সংলগ্ন অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে ছোট-বড় দুর্ঘটনায় আরও প্রাণ হারায় অন্তত ৩৫ জন। গত এক যুগে প্রায় ৯৮ জনের প্রানহানী ঘটে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ৮৯ শতাংশই ঘটছে অরক্ষিত ক্রসিংয়ের কারনে।
গেল বছর ১৯ ডিসেম্বর পুরানাপৈল রেলগেটে গেটম্যান ভোরে ঘুমিয়ে থাকার ফলে রেল ও যাত্রীবাহীবাসের সংর্ঘষে ১৪ জনের প্রানহানী ঘটে, তদন্ত কমিটির রিপোর্টে তা উঠে এসেছে। অপরদিকে কাশিয়াবাড়ী ও আমুঠ্র রেল ক্রসিংয়ে কর্তব্যরত গেটম্যান দায়িত্ব পালন না করায় দুর্ঘটনা ঘটে, তদন্ত রিপোর্টে এমনটি উঠে এসেছে। এছাড়াও বিভিন্ন অবৈধ ও বৈধ রেল ক্রসিংয়ে প্রান হানী ঘটেই চলেছে। কতৃপক্ষ কোন দুর্ঘটনা হলেই দায়সারা একটি রিপোর্ট দিয়েই খালাস। সংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন আর কত মৃত্যুর মিছিল হলে এই ট্রেন দুর্ঘটনার অবসান হবে। মৃত্যুঝুঁকি কমাতে কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়া, অসচেতনতা, দায়িত্বহীনতা আর অরক্ষিত রেল ক্রসিংকে দুষছেন সচেতন নাগরিকরা। তাদের প্রশ্ন রেলপথে আর কতো প্রাণ ঝরলে নেয়া হবে কার্যকর উদ্যোগ?
বাংলাদেশ রেলওয়ে পুলিশ বলছে, আইন অনুযায়ী রেললাইন ছাড়াও লাইনের দুই পাশে মোট ২০ ফুটের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকায় নির্দিষ্ট লোক ছাড়া কেউ এমনকি গবাদিপশুরও প্রবেশ নিষিদ্ধ। ওই সীমানার মধ্যে কাউকে পাওয়া গেলে তাকে গ্রেফতার করার বিধান আছে । তবে সে বিধান কেবল কাগজ কলমেই সীমাবদ্ধ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে পরিদর্শক অসীম কুমার তালুকদার বলেন নিয়ম হলো রেলের উপর গেট নেওয়ার সময় ১০ বছরের অগ্রিম টাকা দিয়ে গেট নিতে হয়, কিন্তু যারা গেট নিয়েছে তারা তা না করে উল্টো রেল কেই অনেকটা বিপদগ্রস্ত করে ফেলেছে। আমাদের লোকবল অত্যন্ত লিমিটেড। ফলে ইচ্ছা থাকলেও বৈধ রেলগেট গুলোতে গেটমেন দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা । রেলওয়ের ডি এম শহিদুল ইসলাম বলেন রেলগেটে দুর্ঘটনা রোধে সরকার ইতিমধ্যে অটো মেশিন বসানোর পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এটি করা গেলে ট্রেন রেল ক্রসিংয়ে আসার পূর্বেই পথচারীরা সিগন্যাল পাবে ফলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে।