logo

সময়: ০৯:২১, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ০৯:২১ অপরাহ্ন

সর্বশেষ খবর

ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের প্রলোভন দেখিয়ে প্রিমিয়াম সফটওয়্যার দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া ০৬ (ছয়) প্রতারক গ্রেফতার

Ekattor Shadhinota
২৪ জানুয়ারী, ২০২৪ | সময়ঃ ১০:১৫
photo
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের প্রলোভন দেখিয়ে প্রিমিয়াম সফটওয়্যার দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া ০৬ (ছয়) প্রতারক গ্রেফতার

এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) এর একটি আভিযানিক দল ২৩ জানুয়ারী, ২০২৪ খ্রি. ১৮.৪৫
ঘটিকায় অভিযান পরিচালনা করে ডিএমপি’র উত্তরা পূর্ব থানাধীন ০৬ নং সেক্টর এলাকা হতে
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন ও প্রিমিয়াম সফটওয়্যার দেওয়ার নামে প্রলোভন দেখিয়ে কোটি
কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া ০৬ (ছয়) প্রতারককে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের নাম:
১। শামীম আহম্মেদ (৩২), পিতা- আলী আহম্মেদ, গ্রাম- পশ্চিম শিমুর্লিয়া, থানা- লৌহজং, জেলা-
মুন্সিগঞ্জ, ২। জাহিদুল ইসলাম (২৪), পিতা- জামাল উদ্দিন, গ্রাম- চিনামুড়া, থানা- কালিহাতি, জেলা-
টাঙ্গাইল, ৩। মাহিদুল হক @ মাহাদী (৩০) পিতা- মোজাম্মেল হক, ৯/৩২, ব্লক-সি, মিরপুর, পল্লবী, ৪।
মোঃ আশরাফুল ইসলাম (২৬), পিতা- মোতালেব হুসেন, গ্রাম- মালতী, থানা- কালিহাতি, জেলা- টাঙ্গাইল,
৫। এহসান মাশফী (২৪), পিতা- মাহবুব রাব্বানী, গ্রাম- ৬৭, রসুলপুর-০১, ধনিয়া, যাত্রাবাড়ী, ৬। রনি
সরদার (২৮) পিতা- আব্দুর রহমান সরদার, গ্রাম- ধোকরাকুল, থানা- পুঠিয়া, রজরা- রাজশাহী।
গ্রেফতারকালে আসামীদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ০৬ (ছয়) টি এসএসডি কার্ড, ০৪
(চার) টি হার্ডডিস্ক, ০৪ (চার) টি ট্যাব, ০১ (এক) টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে।
ফ্রিল্যান্সিং বর্তমান সময়ের খুব জনপ্রিয় একটি পেশা। নিজের সৃজনশীলতাকে পুঁজি করে বিভিন্ন
ফ্রিল্যান্সিং সাইট বা মার্কেট প্লেসে সাফল্যের সাথে কাজ করে অর্থ উপার্জন করছেন অনেকে।
ফ্রিল্যান্সিংয়ের এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন কোর্স করানোর আড়ালে কিছু প্রতিষ্ঠান
প্রতারণা করে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। তেমনি একটি প্রতিষ্ঠান আপস্পট অ্যাকাডেমি
(টঢ়ংঢ়ড়ঃ অপধফবসু), প্রতিষ্ঠানটির ফেইসবুক পেইজে ঈচঅ (ঈড়ংঃ চবৎ অপঃরড়হ) গধৎশবঃরহম এর মাধ্যমে ঘরে
বসে প্রথম দিন থেকেই দৈনিক ১০ থেকে ৪০ ডলার আয় করার প্রলোভন দেখিয়ে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দেওয়া
হয় এবং তার সাথে বিভিন্ন ফেইক ভিডিও রিভিউ ও পোস্ট করা হয়। বিজ্ঞাপনে তারা প্রচার করে সিপিএ
ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্সের জন্য তারা প্রতি গ্রুপে ৩০০ জন করে লোক নেবে এবং এই
কোর্সটি অনলাইনে সম্পূর্ণ ফ্রিতে করাবে। উক্ত বিজ্ঞাপনে কোর্সটি করার জন্য কিভাবে রেজিস্ট্রেশন
করতে হবে সেই সংক্রান্ত তথ্য দেয়া থাকে। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার পর নির্ধারিত সময়ে তাদের প্রেরিত
জুম লিংক এর মাধ্যমে অনলাইন ক্লাসে যুক্ত করা হয়। ক্লাসে তারা অল্প সময়েই সিপিএ মার্কেটিং এর
মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা ইনকাম করার বিভিন্ন ধরনের লোভনীয় অফারের বিষয়ে বলতে থাকে। পরবর্তীতে
সিপিএ মার্কেটিং এর জন্য বিভিন্ন প্রিমিয়াম রাশিয়ান সফটওয়্যার টুলস প্লাগইন করার কথা বলে
বিকাশের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ২৫০০ টাকা করে চাওয়া হয় এবং এই টাকা
পরিশোধ করলে তাদের ক্লাসে এনরোল করা হবে বলা হয়। আগ্রহী প্রশিক্ষণার্থীরা বিকাশে ২৫০০ টাকা
পরিশোধ করলে তাদের সিপিএ মার্কেটিং এর উপর দায়সারাভাবে কিছু রেকর্ডেড ও কিছু লাইভ ক্লাস
করানো হয়। তাছাড়া যেসব প্রিমিয়াম টুলস এর কথা বলে তারা বিকাশে টাকা নেয় সেগুলো দেওয়া হয়
না। প্রিমিয়াম সফটওয়্যার টুলস এর নামে তারা কিছু ফ্রি সফটওয়ার সরবরাহ করে, যা দিয়ে
অংশগ্রহণকারীরা সাধারণত আয় করতে সক্ষম হয় না। কোন কোন ক্ষেত্রে কিছু ভুক্তভোগী তাদের মাধ্যমে
অনলাইনে কিছু ডলার আয় করতে পারলেও ওয়েবসাইট আপডেট এর কথা বলে অর্জিত ডলার কেটে রাখা হয়।
প্রতিষ্ঠার পরবর্তী দুই বছরে আপস্পট অ্যাকাডেমি সিপিএ মার্কেটিং এর উপর এভাবে ১৫৬টি ব্যাচ
এর ট্রেনিং প্রদান করেছে যার প্রতিটিতে প্রায় ৩০০ জন করে অংশগ্রহণকারী ছিল। এভাবে
প্রতারণামূলকভাবে প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে তারা কোটি কোটি টাকা আয় করলেও
প্রশিক্ষণার্থীরা তাদের দেওয়া প্রশিক্ষণ থেকে তেমন কিছুই আয় করতে পারেনি। তাছাড়া প্রিমিয়াম
টুলস প্রদানের নামে ২৫০০ টাকার অফারের মাঝে কেউ প্রথমে পুরো টাকা না দিয়ে আংশিক পেমেন্ট
করলে তাকে অনলাইন ক্লাস থেকে ব্লক করে দেওয়া হয় এবং সেই প্রদত্ত টাকা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আর ফেরত
দেওয়া হওয়া না। এর মাধ্যমেও তারা হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। ভুক্তভোগীরা জানায়, কোর্স
সমাপ্ত হওয়ার পর সিপিএ মার্কেটিং এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে তাদের সাহায্য করার কথা থাকলেও
আপস্পট অ্যাকাডেমি থেকে পরবর্তী সময়ে তারা কোন ধরনের সেবা পান না। এসব বিষয়ে ভুক্তভোগীরা
মেসেজ বা হটলাইনে আপস্পট অ্যাকাডেমির সাথে যোগাযোগ করেও কোন ধরনের সাড়া পায় না।
অনেক ক্ষেত্রে তাদেরকে ব্লক করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ ফ্রিলান্সিং এর কোর্স পরিচালনার আড়ালে তাদের একমাত্র
উদ্দেশ্য হল প্রিমিয়াম সফটওয়্যার দেওয়ার কথা বলে অংশগ্রহণকারীদের নিকট হতে বিপুল পরিমাণ টাকা
হাতিয়ে নেওয়া। আপস্পট একাডেমীর সিপিএ মার্কেটিং কোর্সের মাধ্যমে প্রতারিত হওয়া
ভুক্তভোগীদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে যার সদস্য সংখ্যা প্রায় এক হাজারের উপরে।
জনৈক মো: রাহিম মন্ডল ওহভড়ৎস অঞট অ্যাপের মাধ্যমে এ ধরণের একটি অভিযোগ করলে অভিযোগ প্রাপ্তির
পর এটিইউ তাৎক্ষনিক সংশ্লিষ্ট থানার সাথে যোগাযোগ করে এবং ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে
আশুলিয়া থানার মামলা নং- ৪৪, তারিখ- ১৮/০১/২০২৪ খ্রি. ধারা- ৪২০/৪০৬ পেনাল কোড রুজু করা হয়।
আশুলিয়া থানার অধিযাচনপত্রের ভিত্তিতে এটিইউ নিজস্ব নজরদারী ও গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে আসামীদের
অবস্থান সনাক্ত ও গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

শেয়ার করুন...

আরও পড়ুন...

ফেসবুকে আমরা…